পরমাণু শক্তি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে চায় মিয়ানমার

মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। ছবি: এএফপি ফাইল ফটো

প্রতিবেশী ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে বহির্বিশ্ব থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া রাশিয়ার সঙ্গে জোরদার সামরিক সম্পর্কের পাশাপাশি পরমাণু শক্তি বিষয়ক সহযোগিতা চায় অপর 'বিচ্ছিন্ন' দেশ মিয়ানমার।

আজ রোববার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে মস্কোয় রয়েছেন মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শইগুর সঙ্গে মিয়ানমারের জেনারেল হ্লাইংয়ের বৈঠকের পর মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ জানায়, 'দেশ ২টির মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সামরিক-কারিগরি সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে তারা খোলাখুলি আলোচনা করেছেন।'

মিয়ানমারে ২০২০ সালের নির্বাচনে অং সান সুচি'র ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির বিজয়ের পর ক্ষমতা গ্রহণের প্রাক্কালে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটায় সে দেশের সামরিক বাহিনী।

মিয়ানমারের সামরিক সরকার আন্তর্জাতিকভাবে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হলেও তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমর্থনদাতা রাশিয়া। শুধু তাই নয়, দেশটির বর্তমান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ক্রেমলিন।

সেনা অভ্যুত্থানের পর জেনারেল মিন অং হ্লাইং বেশ কয়েকবার রাশিয়া সফর করেছেন। পশ্চিমের বেশ কয়েকটি দেশ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও রাশিয়া ও চীন দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে।

গত ১৮ মাসের কম সময়ে মিয়ানমারে সামরিক সরকারের দমন-পীড়নে ২ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।

মানবাধিকার সংস্থা প্রোগ্রেসিভ ভয়েস'র চেয়ারপারসন খিন ওহমার গণমাধ্যমকে বলেন, 'পুতিন সরকার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতা করছে। সেখানে প্রতিদিনই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং তা থেকে সামরিক সরকারকে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।'

আল জাজিরা'র প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান রাশিয়া সফরে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলে বিমান বাহিনীর একজন কমান্ডার রয়েছেন। কেননা, দেশটির বিমান বাহিনী উল্লেখযোগ্য মাত্রায় রুশ সহযোগিতা পেয়ে থাকে।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী সক্রিয় সশস্ত্র সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স'র (পিডিএফ) সঙ্গে সেনাবিরোধী অভিযানে অংশ নিচ্ছে সেখানকার জাতিগত সংখ্যালঘুদের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বহু দশক ধরে সংগ্রামরত সশস্ত্র সংগঠনগুলোও।

অভ্যুত্থানের পর সেনাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত হামলার মাধ্যমে বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে সশস্ত্র সংগঠনগুলো জয় পাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্যাংকক-ভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অ্যান্টনি ডেভিস গণমাধ্যমকে বলেন, 'মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী মূলত রুশ ও সোভিয়েতযুগের সরঞ্জাম দিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করছে।'

তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু বিমান বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশ মিয়ানমারে উৎপাদিত হয় না, তাই এর যথাযথ সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না থাকলে তারা খুব শিগগির বড় ধরনের সমস্যায় পড়বে।'

আল জাজিরার প্রতিবেদনে রাশিয়ার কাছে মিয়ানমার পরমাণু শক্তি নিয়ে সহযোগিতা চাওয়ার প্রসঙ্গ থাকলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
US election outcome’s likely impact on the Russia-Ukraine war

US election outcome’s likely impact on the Russia-Ukraine war

The endgame of the Ukraine war remains uncertain with US policy likely to be influenced by the outcome of the US election.

3h ago