মিয়ানমারে অর্থ ও অস্ত্র সহযোগিতা কমানোর আহ্বান জাতিসংঘের

Myanmar military
সেনা শাসনের বিরুদ্ধে ইয়াঙ্গুনে প্রতিবাদ। রয়টার্স ফাইল ফটো

মিয়ানমারের জনগণের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে দেশটির সেনাবাহিনীকে অর্থ ও অস্ত্র সহযোগিতা কমিয়ে দিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়। 

আজ শুক্রবার সংস্থাটির প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়ে সুপারিশের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে।

এর আগে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার ঘটনা তদন্তে স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশও এমন ছিল।

সহিংসতার পর ২০১৭ সালে রাখাইন থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই সহিংসতাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে।

পরে ২০২১ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

এরপর থেকে সামরিক বাহিনী ও গণতন্ত্রকামী জনগণের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষে প্রায় ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

আজ প্রকাশিত প্রতিবেদনে মিয়ানমারে মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং ক্ষতিকর আর্থ-সামাজিক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। 

'২০২১ সালের প্রথম দিকে দেশের ক্ষমতা দখলের পর তথাকথিত রাজ্য প্রশাসন কাউন্সিল গঠনমূলক ও টেকসই উপায়ে শাসন করার পরিবর্তে মিয়ানমারের জনগণের ওপর দমন ও পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে,' প্রতিবেদনে বলা হয়।

বেশ কয়েকটি দেশ মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে এবং সামরিক সহযোগিতায় নিয়োজিত আছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের আগের সুপারিশগুলোর ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হলেও, অভ্যুত্থানের পরে তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, 'সেনাবাহিনীর বৈদেশিক অর্থপ্রাপ্তির বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।'

এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন এবং সমন্বিত পদ্ধতিতে দেশটির সামরিক বাহিনীকে আর্থিক বিচ্ছিন্ন করার প্রক্রিয়াকে জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।

এতে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষ জনগণের কল্যাণ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির তুলনায় সামরিক আগ্রাসনকে স্পষ্টভাবে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

পূর্ববর্তী বার্ষিক সরকারি বাজেটের তুলনায়, সামরিক কর্তৃপক্ষের ২০২২-২৩ সালের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক কল্যাণে বরাদ্দ কমিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে দারিদ্র্য কমপক্ষে ২ গুণ বেড়েছে এবং অভ্যুত্থানের পর থেকে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শিশুদের অর্ধেকের বেশি গত ২ বছর শিক্ষার সুযোগ পায়নি।

এতে আরও বলা হয়, কিছু দেশ ও কোম্পানি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রক্ষা করে যাচ্ছে।

'যেসব দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের খেয়াল রাখা উচিত যেন এর মাধ্যমে সামরিক বাহিনী অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত না হয়,' প্রতিবেদনে যোগ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Record toll collection on Padma and Jamuna bridges

Padma Bridge generated a record toll revenue of Tk 54.32 crore, while Jamuna Tk 41.81 crore

1h ago