মিয়ানমারে সামরিক শাসন বিরোধীদের ওপর কামান ও বিমান হামলা
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গতকাল সোমবার দেশটির পূর্বাঞ্চলে কামান ও বিমান ব্যবহার করে সামরিক শাসন বিরোধী স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনের ওপর হামলা চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বাধীনতাকামীদের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের ফলে অনেক বাসিন্দা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন এবং হাজারো মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী কায়েহ রাজ্যের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী প্রায় সাড়ে ১৪ কিলোমিটার দূরে ডেমোসোয় রাজ্যের রাজধানী লোইকাউয় থেকে কামান নিক্ষেপ করছে।
সেখানকার সামরিক শাসন বিরোধী স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন জানিয়েছে, তারা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করে পাল্টা ভারী হামলার কবলে পড়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী অং সান সুচি ও তার নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে জনগণকে দমিয়ে রাখতে এবং তাদের ওপর বিভিন্ন আদেশ চাপাতে হামলা চালিয়ে আসছে। এর মধ্যেও জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনী এবং সামরিক শাসন বিরোধী স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে কয়েক দশকের পুরনো বিরোধগুলো পুনরায় জাগ্রত হয়েছে এবং ছায়া সরকারের সঙ্গে জোটবদ্ধ স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামলা চালিয়েছে সামরিক বাহিনীর ওপর।
এর জবাবে সামরিক বাহিনী ভারী অস্ত্র এবং বিমান হামলা চালিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লোইকাউয়ের এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর কামানগুলো দেখা যাচ্ছে। আমি আকাশে তাদের কামানের আগুন দেখেছি। কামানের শব্দে আমাদের বধির হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল।’
কায়েহ রাজ্যে সক্রিয় সামরিক শাসন বিরোধী স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বাহিনী কারেনি পিপলস ডিফেন্স ফোর্স তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, তারা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় সামরিক বাহিনী বিমান হামলা চালানোর জন্য বিভিন্ন অস্ত্র সমৃদ্ধ দুটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কায়েহ রাজ্যে সংঘর্ষের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব মিয়ানমারে প্রায় তিন হাজার ৭০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অনেকে জঙ্গলে পালিয়ে গেছেন এবং তাদের খাবার ও ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।
Comments