পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে
পাকিস্তানে চলতি বছর জুন থেকে বন্যায় এ পর্যন্ত ১ হাজার জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। এ অবস্থায় দেশটি 'গুরুতর জলবায়ু বিপর্যয়ের' মুখোমুখি বলে কর্মকর্তারা বলছেন।
ভারী বর্ষণের ফলে আকস্মিক বন্যায় গ্রাম ও ফসলের মাঠ প্লাবিত হচ্ছে। সামরিক বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা বন্যায় আটকে পড়া জনগণকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে এবং খাদ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত আছে।
দেশটির ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির বরাত দিয়ে রোববার দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি জানায়, মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৩ জনে পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১১৯ জন।
সংস্থাটি চলতি বছরের বন্যাকে ২০১০ সালের ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে তুলনা করছে। সে বছর পাকিস্তানে বন্যায় ২ হাজার জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল এবং দেশের প্রায় এক পঞ্চমাংশ পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল।
পাকিস্তানি সিনেটর এবং দেশের শীর্ষ জলবায়ু কর্মকর্তা শেরি রেহমান টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, পাকিস্তান একটি 'গুরুতর জলবায়ু বিপর্যয়ের' মুখোমুখি, যা গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ।
'আমরা এই মুহূর্তে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছি। দাবদাহ, দাবানল, আকস্মিক বন্যা, গ্লেসিয়ার ভেঙে পড়া এবং এই দশকের ভয়াবহ বৃষ্টিপাত সারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, বলেন তিনি।
দেশটির ৪টি প্রদেশের প্রায় সোয়া ৩ কোটি মানুষ, অর্থাৎ প্রতি ৭ জনে একজন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, অসংখ্য রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।
সোয়াত নদীর পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চারসাদ্দা ও নওশেহরা জেলাসহ বেশ কিছু এলাকা। বন্যা আক্রান্তদের বাড়িঘর থেকে সরকারি ভবনে স্থাপিত আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বন্যা দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
সিন্ধু নদীর একটি ব্যারাজের তত্ত্বাবধায়ক আজিজ সুমরো জানান, এই মুহূর্তে সিন্ধু নদী প্লাবিত হয়ে উচ্চ বন্যার আশঙ্কা আছে।
শক্তিশালী সিন্ধু নদী পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধু অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ নদী প্লাবিত হয়ে বন্যা শুরু হলে পাকিস্তানের একটি বৃহৎ অঞ্চল তথা বড় জনগোষ্ঠী বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
Comments