সন্ত্রাস-বিরোধী মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেন ইমরান খান
গতকাল রোববার রাতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে আজ সোমবার তিনি ইসলামাবাদের হাইকোর্টের কাছ থেকে ৩ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিশ্চিত করেছেন।
আজ পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসলামাবাদের এফ-নাইন পার্কের এক সমাবেশে একজন অতিরিক্ত দায়রা জজ ও পুলিশের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-দমন আইনে এফআইআর করা হয়।
পরবর্তীতে ইমরানের পক্ষে পিটিআইর আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী ও বাবর আওয়ান জামিনের আবেদন জমা দেন। তারা আবেদনে উল্লেখ করেন, যখনই সমন জারি করা হবে, তখনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী আদালতে হাজির হবেন।
আবেদনে আরও জানানো হয়, ইমরানের খানের কোনো অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড নেই এবং তাকে কখনো কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি।
আবেদনে আরও জানানো হয়, ইমরানের পালিয়ে যাওয়ার বা তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি একইসঙ্গে জামিনের বিপরীতে নিশ্চয়তা হিসেবে বাড়তি অর্থ জমা দিতে প্রস্তুত।
তবে জামিনের আবেদনের বিপরীতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে ৩টি আপত্তি জানানো হয়।
রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের মতে, ইমরান জামিনের আবেদন জমা দেওয়ার আগে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন করেননি, তিনি হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানানোর আগে সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি দমন আদালতে জাননি এবং তার বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলার যাচাইকৃত কপি (আবেদনের সঙ্গে) জমা দেননি।
তবে বিচারপতি মহসিন আখতার কায়ানি ও বিচারক বাবর সাত্তারের বেঞ্চ জামিন আবেদনের শুনানির পর রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের আপত্তিকে উপেক্ষা করে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ইমরানের জামিন মঞ্জুর করেন। তারা ইমরানকে ২৫ আগস্টের মধ্যে একটি দুর্নীতি দমন আদালতের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন।
ইতোমধ্যে, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইমরানকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের কার্যালয়ে লিখিত অনুমতি চেয়েছে।
সূত্রদের মতে, গ্রেপ্তার এড়াতে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান বানি গালায় অবস্থিত বাসস্থান থেকে অন্যত্র সরে গেছেন।
তবে পিটিআই নেতা ফয়সাল ভাওদা জানান, ইমরান তার বাড়িতেই আছেন।
ইমরান খানের বাসস্থানের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার বাসায় পৌঁছানোর রাস্তাগুলো অননুমোদিত ব্যক্তিদের জন্য বন্ধ করে রাখা আছে। শুধুমাত্র পরিবারের সদস্য ও নিকটজনদের আসা যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
সূত্ররা আরও জানায়, ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা অথবা তাকে বাসায় অন্তরীণ রাখার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এফআইআরে বলা হয়েছে, ইমরান খান এফ-নাইন পার্কে আয়োজিত সমাবেশে অতিরিক্ত দায়রা জজ জেবা চৌধুরী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দেন, যেটি এক ধরনের 'সন্ত্রাস।' এফআইআর মতে, এই হুমকির পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল পুলিশ ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের তাদের দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়া।
Comments