পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে কিম জং উনের নতুন আইন

কিম জং উন
কিম জং উন। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

উত্তরার কোরিয়ার নেতা কিম জং উন নানান কর্মকাণ্ড দিয়ে সবসময় আলোচনায় থাকেন। তার সর্বশেষ কর্মকাণ্ডটি রীতিমতো বিশ্ব নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। নতুন কী এমন করেছেন কিম?

উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে। ওই আইনটি নিজেদের রক্ষায় 'স্বয়ংক্রিয়ভাবে' পারমাণবিক হামলার অধিকার দেবে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম জং উন বলেছেন—এই নতুন আইন দেশটির পারমাণবিক অবস্থাকে 'অপরিবর্তনীয়' রাখবে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের যে কোনো আলোচনাকে নিষিদ্ধ করবে।

উত্তর কোরিয়ার পার্লামেন্ট সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলি গত ৮ সেপ্টেম্বর আইনটি পাস করে। কেসিএনএর জানায়, ২০১৩ সালের আইনকে প্রতিস্থাপন করে এই আইন করা হয়েছে। আগের আইনটি উত্তর কোরিয়ার প্রথম পারমাণবিক অবস্থার রূপরেখা দিয়েছিল।

কেসিএনএ কিমকে উদ্ধৃত করে বলেছে, 'পারমাণবিক অস্ত্রনীতি প্রণয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য হলো একটি অপ্রতিরোধ্য সীমারেখা টানা। যেন আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বিতর্ক না হয়।'

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, কিম বলেছেন—উত্তর কোরিয়া ১০০ বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হলেও তিনি কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র সমর্পণ করবেন না।

উত্তর কোরিয়ার কেন এই উদ্যোগ?

ধারণা করা হচ্ছে, পিয়ংইয়ং ২০১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক ও অন্যান্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন বন্ধে ব্যর্থ হওয়ায় এই নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

নতুন আইন কী?

উত্তর কোরিয়ার নতুন আইনটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খুব সহজ। এটি প্রিমিটিভ পারমাণবিক হামলার অনুমোদন দেয়। এর অর্থ—আইনটি কার্যকর করা যেতে পারে যদি পিয়ংইয়ং মনে করে পারমাণবিক হামলার সম্ভাবনা আছে বা পিয়ংইয়ং যদি বিশ্বাস করে তার রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়েছে। অথবা তার পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ড অর্গানাইজেশন হুমকিতে আছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই নতুন আইনের বিধান অনুযায়ী পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে কিমের 'সব নির্ধারক শক্তি' আছে। যদি কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলা হয়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র 'স্বয়ংক্রিয়ভাবে' চালু করা যেতে পারে।

কেসিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনটি অন্যান্য দেশের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র বা প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এ ছাড়া, পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও পারমাণবিক অস্ত্রের অপব্যবহার রোধে পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ কমাতে আইনটি করা হয়েছে।

আরেকটু ব্যাখ্যা

উত্তর কোরিয়া গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের ক্রমাগত সমালোচনা করে যাচ্ছে। এ ছাড়া, গত এক বছরে পিয়ংইয়ং ৩০টিরও বেশি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। এর মধ্যে ব্যালিস্টিক, ক্রুজ ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে—তারা কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক কার্যক্রম 'নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ' করছে।

নতুন আইনের কথা উল্লেখ না করলেও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোরীয় উপদ্বীপে তাদের অবস্থান 'পরিবর্তন হয়নি'।

Comments

The Daily Star  | English

If consensus commission fails, it will be a collective failure: Ali Riaz

He made the remarks in his opening statement during the 14th day of the second phase of dialogues with political parties

10m ago