অর্থনীতির উন্নয়নে মদ্যপান বাড়ান: জাপানের কর বিভাগ

রেস্তোরাঁ বন্ধের আগে মদের বোতল সাজাচ্ছেন জাপানের এক রেস্তোরাঁ মালিক। ফাইল ছবি: রয়টার্স
রেস্তোরাঁ বন্ধের আগে মদের বোতল সাজাচ্ছেন জাপানের এক রেস্তোরাঁ মালিক। ফাইল ছবি: রয়টার্স

জাপানের ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মদ্যপানের পরিমাণ খুবই কম। এক অভিনব প্রচারণার মাধ্যমে এই পরিস্থিতি বদলাতে চাইছে দেশটির কর বিভাগ।

আজ বিবিসির এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মদ বা মদজাতীয় পানীয় পানের প্রবণতা কম থাকায় এই খাত থেকে কর বিভাগের রাজস্ব উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশটির জাতীয় রাজস্ব সংস্থা দেশব্যাপী এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

'সাকে ভিভা!' নামের এই প্রচারণার মাধ্যমে কর সংস্থা মদ্যপানের বিষয়টিকে আরও আকর্ষণীয় করার পরিকল্পনা করছে, যা প্রকারান্তরে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাপানের বিখ্যাত রাইস ওয়াইন (চাল থেকে বানানো মদ) বা সাকে। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এই প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের বলা হয়েছে মদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা দিতে। জাপানি সাকে, সচু, হুইস্কি, বিয়ার অথবা ওয়াইনের ব্যবসাকে ঘিরে পরিকল্পনা জমা দেওয়া যাবে।

এই প্রতিযোগিতার দায়িত্বে আছে কর কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধি দল। তাদের মতে, মূলত করোনা মহামারির সময় অভ্যাসের পরিবর্তন ও জনগোষ্ঠীতে বয়োবৃদ্ধদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সার্বিকভাবে মদের বিক্রি কমেছে।

কর্তৃপক্ষ চাইছে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা প্রচারণা, ব্র্যান্ডিং, এমন কী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মদের বিক্রি বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে আসবেন।

এমন উদ্যোগে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জাপানে। অনেকেই এই 'অস্বাস্থ্যকর' অভ্যাসকে জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টার সমালোচনা করছেন। আবার অনেকে এতে উৎসাহ পেয়ে অনলাইনে বিভিন্ন অভিনব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যাবে। সেরা পরিকল্পনাগুলো বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় চূড়ান্ত করা হবে। নভেম্বরে সেরা পরিকল্পনাগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।

এই প্রচারণার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জাপানে মদের বাজার সংকুচিত হচ্ছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং জন্মহার কমার কথা বলা হয়েছে সেখানে।

কর সংস্থার দেওয়া সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে জাপানিরা বছরে ১০০ লিটার মদ পান করতেন। ২০২০ এ এসে তা ৭৫ লিটারে নেমেছে।

জাপানের হুইস্কির চাহিদা সারা বিশ্বে। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এই ধারায় মদ ও মদজাতীয় পণ্য থেকে কর আদায়ের হারও কমেছে। ১৯৮০ সালে মোট করের ৫ শতাংশ এই খাত থেকে আসলেও ২০২০ সালে তা ১ দশমিক ৭ শতাংশে এসে পৌঁছেছে।

বিশ্বব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৯ শতাংশের বয়স ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি। অন্য কোনো দেশের জনগোষ্ঠীতে এই বয়স-শ্রেণীর মানুষের আনুপাতিক হার এত বেশি নেই।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, সাকে বা রাইস ওয়াইন থেকে করের পরিমাণ কমে যাওয়াই জাপানের অর্থনীতির একমাত্র সমস্যা নয়।

নিম্ন জন্মহারের কারণে শিগগির তরুণ-কর্মী সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশটি।

গত মে মাসে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক রসিকতা করে টূইট করেন, 'যেটা সবাই জানে, সেটা আবারও বলার ঝুঁকি নিয়ে লিখছি, কোনো কারণে জন্ম হার মৃত্যু হারের চেয়ে হঠাৎ করে না বেড়ে গেলে জাপানের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। সেটা পৃথিবীর জন্য বড় ক্ষতির কারণ হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

3h ago