সিকিমে বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, নিখোঁজ ১০২
ভারতের সিকিমে ভারী বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হয়েছে। ২২ সেনাসহ অন্তত ১০২ জন এখনো নিখোঁজ আছেন।
আজ বৃহস্পতিবার এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।
রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৬ জন আহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মোট ২২ হাজার মানুষ এই বন্যায় প্রভাবিত হয়েছেন।
রাজ্যে অতিবৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আকস্মিক বন্যায় সিকিমে ১৪টি সেতু ভেঙে গেছে। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে তিন হাজারের বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনী ও ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনীর (এনডিআরএফ) নেতৃত্বে সরকারের একাধিক সংস্থা বন্যাদুর্গত অঞ্চলে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিমানবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ছবি ও ভিডিওতে সিকিম রাজ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে।
সিকিমের পূর্বে অবস্থিত পাকইয়ং গ্রাম সবচেয়ে বড় আকারে আক্রান্ত হয়েছে। হিমালয় পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত এই গ্রামে ৭ জন নিহত হন এবং ২৩ সেনা সহ মোট ৫৯ জন নিখোঁজ হয়েছে।
এই দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যায় সিকিমের মুখ্য সচিব ভিবি পাঠক জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিকিমের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত লোনাক লেকের পানি উপচে পড়ে এবং এটি তিস্তা নদীর দিকে প্রবাহিত হয়।
উল্লেখ্য, তিস্তা নদী সিকিম ও পশ্চিম বঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে পড়েছে।
'শিগগির তিস্তার বিভিন্ন অংশে পানি বেড়ে যাওয়ার খবর আসতে থাকে। বিশেষত চানথাং এ তৃতীয় মাত্রার একটি বাঁধ অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়।'
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অধীনে সিকিম রাজ্য সরকার এ বিপর্যয়কে একটি দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে এবং সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে রাজ্যের কর্মকর্তারা আশংকা করছে, খাবার ও সুপেয় পানির অভাব দেখা দিতে পারে। সেনাবাহিনী বিভিন্ন অংশে অস্থায়ী বেইলি সেতু নির্মাণ করে বন্যাদুর্গত এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বজায় রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা।
এনডিটিভির সাংবাদিকরা সরেজমিনে পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং শহরের তিস্তা বাজার এলাকা পরিদর্শন করে দেখতে পেয়েছেন সেখানে তিস্তার বহন করে আনা কাদামাটি ঘড়ে ঢুকে পড়ছে এবং গাছপালার ক্ষতি করেছে। কয়েকটি বাড়ির পুরো মেঝে কাদায় ভরে গেছে। নদীর তীরে অবস্থিত বেশ কিছু বাড়ি ইতোমধ্যে ভেসে গেছে।
Comments