তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, বন্যা সতর্কতা জারি

তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছবি: স্টার

উজানে ভারত থেকে আসা পানির কারণে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার আজ বুধবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির লেভেল ৫২ দশমিক ১৫ মিটার অতিক্রম করে ৫২ দশমিক ৩০ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।'

তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আজ রাতের মধ্যেই পানির লেভেল ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে উঠতে পারে।'

শুনীল কুমার বলেন, 'ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আজ দুপুর থেকেই পানি বাড়ছে।'

এতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বিবেচনায় তিস্তাপাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্কতা জারি করেছে বলেও জানান তিনি।

পাউবো'র এই নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, 'তিস্তা ব্যারেজের উজানে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দিয়েছে ভারত। এ কারণে তিস্তায় পানি বাড়ছে। এতে তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।'

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, তার ইউনিয়ন তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকায়। আজ দুপুর থেকে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনা হচ্ছে।

'এবার বন্যা হলে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন', বলেন তিনি।

চর সিন্দুর্ণা এলাকার কৃষক নজর আলী ডেইলি স্টারকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঘোষণা শুনে আজ বিকেলে তারা গবাদিপশু ও আসবাবপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। জমিতে আমন ধান ও সবজি রয়েছে। এবার বন্যায় ফসলের ক্ষতি হলে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হবে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ সাংবাদিকদের বলেন, 'তিস্তাপাড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে। নদীপাড়ের মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে সহায়তার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' 

Comments