এই সমাজের প্রতি আফসোস হয়: জন্মদিনে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী, লেখক, শিক্ষক, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৯তম জন্মদিন আজ ২৩ জুন। ১৯৩৬ সালের এই দিনে মুন্সীগঞ্জের বাড়ৈখালিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

জন্মদিনে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'এক জীবনের এ দীর্ঘ সময়। এখনো বেঁচে আছি ভালো আছি— ব্যক্তিগতভাবে তৃপ্ত আমি; কিন্তু সামাজিক, সামষ্টিকগতভাবে অতৃপ্ত। এ অতৃপ্তি আমায় পোড়ায়। সামাজিক দায়ে কষ্ট পাই।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ভাষা আন্দোলনের যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হয়নি, মুক্তিযুদ্ধের যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়ন হয়নি, শহীদের রক্তের ত্যাগে পাওয়া দেশে এখনো সামাজিক মুক্তি আসেনি। হিংসা বিদ্বেষ আরও বেড়েছে। দেশের বর্তমান উন্নয়নের অন্তরালে রয়েছে আর্তনাদ, বেদনা। এই উন্নতিতে বৈষম্য বাড়ছে। এই বিষয়গুলো আমায় বেশ পোড়ায়। এই সমাজের প্রতি আফসোস হয়।'

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী একাধারে প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদ। শিক্ষা-সংস্কৃতি, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার পরিবেশ সুরক্ষা, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার আন্দোলনের পুরোধা।

গতানুগতিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বদলানোর স্বার্থেই মানুষের সামাজিক মুক্তির চিন্তায় প্রশ্ন ও চিন্তাকে তিনি এগিয়ে দিয়েছেন বছরের পর বছর। কখনো লিখে, কখনো সম্পাদনা করে ও বলে প্রচার করেন তার আদর্শ।

দেশবরেণ্য এই লেখকের ক্ষুরধার লেখনি মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। তার বাবা হাফিজ উদ্দিন চৌধুরী ও মা আসিয়া খাতুন। বাবার চাকরি সূত্রে শৈশব কেটেছে রাজশাহীতে ও কলকাতায়। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুল, নটর ডেম কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চতর গবেষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের লিডস এবং লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে।

পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন ১৯৫৭ সালে। সম্পাদনা করেছেন 'পরিক্রমা', 'সাহিত্যপত্র', 'সচিত্র সময়', 'সাপ্তাহিক সময়', 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা', 'ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টাডিস' প্রভৃতি।

সাহিত্য সংস্কৃতি ও গবেষক কীর্তির জন্য পেয়েছেন লেখক সংঘ পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদক।

জন্মদিন উপলক্ষে আগামী ৩০ জুন শনিবার বিকেল ৫টায় শিশু একাডেমির মিলনায়তনে তাঁর একক বক্তৃতার আয়োজন করেছে ত্রৈমাসিক পত্রিকা 'নতুন দিগন্ত'।

Comments

The Daily Star  | English

Khulna-Dhaka train service via Padma Bridge takes off

The new route via the Padma Bridge will cut travel time to just under four hours

7m ago