গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবিতে পাওয়া গেল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
![গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবি গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবি](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/02/01/422337135_7034225269978878_7038038972323471982_n.jpg?itok=A4OhTy58×tamp=1706793723)
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বিরাট রাজার ঢিবিতে প্রথমবারের মতো প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ পরিচালনা করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। খননের মাঝামাঝি সময়ে বেরিয়ে এসেছে বেশকিছু অবকাঠামো ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, যেগুলো প্রাচীন ও মধ্যযুগের হতে পারে বলে ধারণা করছে খনন কাজে নিয়োজিত রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক দল।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক এবং খননকারী দলের প্রধান ড. নাহিদ সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান।
ঢিবিটির আকার ৫০ মিটার, প্রস্থ ৩৫ মিটার এবং উচ্চতা ৪ মিটার।
![গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবি গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবি](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/02/01/422408668_298893939839192_5315399076756422641_n.jpg?itok=d2WZ6zoN×tamp=1706793783)
নাহিদ সুলতানা বলেন, খননে ধারণার চেয়ে বড় আকারের অবকাঠামো পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত এখানে পোড়ামাটির ভগ্নাংশ, পোড়ামাটির ফলক, অলংকৃত ইট (সাধারণত ধর্মীয় উপাসনালয়ের সাজসজ্জায় ব্যবহৃত), ভিত্তিপ্রস্তর পিলার পাওয়া গেছে, যা প্রাচীনত্বের সাক্ষ্য বহন করে।
'তবে নিদর্শনগুলো ঠিক কোন সময়ের এবং কারা এখানে বাস করতেন বা কাদের রাজ্য ছিল বড় আকারে খনন কাজ সম্পন্ন না হলে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়', বলেন তিনি।
জনশ্রুতি আছে, এখানে প্রাচীন একটি দুর্গ নগরী ছিল। এর নিরাপত্তার জন্য ছিল সু-উচ্চ প্রাচীর এবং প্রাচীরের বাইরে প্রশস্ত ও সুগভীর পরিখা। তবে খননকারী দল এখন পর্যন্ত প্রাচীন দুর্গ নগরীর কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মূল অবকাঠামোর সঙ্গে আরও দুই-তিনটি মন্দিরের সংযোগ সড়ক ছিল, যা ধ্বংসপ্রাপ্ত।
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/02/01/420507952_6824590650984669_5825356020749266986_n.jpg?itok=O9d0kNYA×tamp=1706796670)
খাঁজা এম এ কাইয়ুম নামের স্থানীয় গবেষক দীর্ঘ ৪০ বছর বিরাট রাজার ঢিবি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার নোটবুকের তথ্যানুসারে, বিরাট রাজা পুরো ভারতবর্ষে 'মৎস্যরাজ' হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এই অঞ্চলে মাছ চাষের জন্য তিনি ৯৯৯টি পুকুর খনন করেন।
রাখাল রাজ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯২৫-২৬ সালে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ১৯০৫ সালের দিকেও এ স্থানটি জঙ্গলে ঘেরা ছিল। কয়েক বছর আগে সাঁওতালরা জায়গাটি পরিষ্কার করে ঘরবাড়ি তৈরি করেন।
![গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবি গাইবান্ধার বিরাট রাজার ঢিবি](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/02/01/422129766_684700347073069_8545246926857009123_n.jpg?itok=eFnCVrUQ×tamp=1706793840)
নাহিদ সুলতানা বলেন, 'প্রত্নত্ত্বস্থলটি ইতোমধ্যে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। তবে বড় পরিসরে খনন কাজ করে জায়গাটিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সেইসঙ্গে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।'
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বিরাট রাজার ঢিবি খনন কাজ শুরু করে গত বছর। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি খনন দল এ কাজটি করছে। দলের ৮ সদস্য হলেন- ড. নাহিদ সুলতানা, ড. আহমেদ আবদুল্লাহ, রাজিয়া সুলতানা, হাবিবুর রহমান, এস, এম, হাসানাত বিন ইসলাম, মো. আবুল কালাম আজাদ, তারিকুল ইসলাম ও উম্মে সালমা ইসা।
এ ছাড়া ২০ জন শ্রমিক খনন কজে নিয়োজিত আছেন।
Comments