একাত্তরের এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় আখাউড়া

আখাউড়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দরুইন গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোস্তফা কামালের সমাধি। ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশের পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়াবাসীর জন্য স্মরণীয় দিন। এই দিনে এই এলাকার মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হোন। বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোস্তফা কামাল এখানে জীবন উৎসর্গ করেন।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধে আখাউড়া ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম রণাঙ্গন। ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে এ এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়।

সে বছর ২৩ আগস্ট বাংলাদেশি দোসরদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগরে গণহত্যা চালায়। ওই দিন একই গ্রামের ২৭ জনসহ ৩৩ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে হানাদাররা।

১৮ এপ্রিল আখাউড়া রণাঙ্গনে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন মোস্তফা কামাল।

১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর উপজেলার আজমপুর ও রাজাপুর এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়। ৩ ডিসেম্বর হওয়া যুদ্ধে দখলদার বাহিনীর ১১ সেনা নিহত ও মুক্তিবাহিনীর ২ জন শহীদ হন।

৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মিলে আখাউড়া আক্রমণ করে। ওই দিন আজমপুরে শহীদ হন লেফটেন্যান্ট ইবনে ফজল বদিউজ্জামান।

৫ ডিসেম্বর সারাদিন ও রাত যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া শত্রুমুক্ত হয়। আখাউড়া মুক্ত করার পর মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে নিলু মিয়া, নাজির হোসেন, কামাখ্যা রঞ্জন ঘোষ, দেওয়ান খান খাদেমসহ অনেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

আখাউড়া থেকে পিছু হটার পর পাকিস্তানি সেনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পূর্বাঞ্চলের আর কোথাও ভালোভাবে অবস্থান নিতে পারেনি।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় 'আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ড'র উদ্যোগে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে আছে মোমবাতি প্রজ্বলন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল সোমবার মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড।'

তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। সকাল ১০টার দিকে আনন্দ র‌্যালি বের হবে। শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পোস্ট অফিসের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিকেল ৪টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Netanyahu approves Lebanon ceasefire deal ‘in principle’: media

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu approved the emerging ceasefire deal with Hezbollah "in principle" during a security consultation with Israeli officials on Sunday night, a source familiar with the matter said

20m ago