কথাসাহিত্যিক ও গবেষক হোসেনউদ্দীন হোসেন মারা গেছেন

কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে হোসেনউদ্দীন হোসেনের ইঁদুর ও মানুষেরা উপন্যাসটি এমএ ক্লাসে পড়ানো হয়। 
ছবি: সংগৃহীত

প্রাবন্ধিক, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক হোসেনউদ্দীন হোসেন মারা গেছেন। তিনি গতকাল সোমবার (২০ মে) বিকেল ৪টায় শারীরিক নানা জটিলতায় যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন।

কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, উনার বিশেষ করে কিডনিতে সমস্যা ছিল। গত ১৪ মে তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে যশোর একটি ভর্তি করা হয়। পরে যশোর সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে তার ব্রেন হ্যামারেজ ধরা পড়ে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকাল ৪টায় মারা যান। 

হোসেন উদ্দীন হোসেন ১৯৪১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর ঝিকরগাছা ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৯ সালে সম্পন্ন করেন উচ্চ মাধ্যমিক। ১৯৫৫ সালে তার প্রথম কবিতা কলকাতার দৈনিক পত্রিকা লোকসেবকে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তার বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা ঢাকা ও কলকাতার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হওয়া শুরু করে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নেন এই কবি। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭টি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে—নষ্ট মানুষ, অমৃত বৈদেশিক, সাধুহাটির লোকজন, ইঁদুর ও মানুষেরা, প্লাবন এবং একজন নুহ, ভলতেয়ার ফ্লবেয়ার কলসত্ব ত্রয়ী উপন্যাস ও যুগমানস, ঐতিহ্য আধুনিকতা ও আহসান হাবীব, বাংলার বিদ্রোহ, সমাজ সাহিত্য দর্শন প্রবন্ধ, রণক্ষেত্রে সারাবেলা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, লোকলোকোত্তর গাঁথা কিংবদন্তী, বনভূমি ও অন্যান্য গল্প, অনন্য রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি।

কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০ সাল থেকে বাংলা বিভাগে হোসেনউদ্দীন হোসেনের ইঁদুর ও মানুষেরা উপন্যাসটি এমএ ক্লাসে পড়ানো হয়। 

তার কীর্তির জন্য মুহম্মদ শহীদুল্লাহ স্মৃতি পদক-১৯৯৬, বিজয় দিবস পদক-১৯৯৭, মাইকেল মধুসূদন একাডেমী পদক-২০০১, ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।
 

Comments