হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছবি: সংগৃহীত

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১২ সালের আজকের দিনে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে হারানোর শোক এখনো পাঠকদের মনে।

গত ১১ বছর তিনি না থাকলেও অগণিত পাঠকের মনে লেখার মাধ্যমে বেঁচে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। ডাকনাম ছিল কাজল। তার বাবা নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে ছেলের নাম রাখেন শামসুর রহমান। পরে আবার নিজেই ছেলের নাম পরিবর্তন করে ‌হুমায়ূন আহমেদ রাখেন। নানানভাবে পরিবার থেকে পেয়েছেন লেখালেখির প্রেরণা। বাবা ফয়জুর রহমান আহমদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পিরোজপুর মহকুমার এসডিপিও হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ হন। তিনিও পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি করতেন। বগুড়া থাকার সময় তিনি 'দ্বীপ নেভা যার ঘরে' শিরোনামে একটি বই প্রকাশ করেছিলেন।

তার মা আয়েশা ফয়েজ। লেখালিখির অভ্যাস না-থাকলেও 'জীবন যে রকম' নামের একটি আত্মজীবনী গ্রন্থ রচনা করেছেন। হুমায়ূন আহমেদের অনুজ মুহম্মদ জাফর ইকবাল দেশের একজন বিজ্ঞান শিক্ষক এবং কথাসাহিত্যিক; সর্বকনিষ্ঠ ভাই আহসান হাবীব রম্য সাহিত্যিক এবং কার্টুনিস্ট।

হুমায়ূন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন অনেকদিন। লেখালিখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাকে আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। অলৌকিকভাবে তিনি বেঁচে যান।

স্বাধীনদেশে ১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস 'নন্দিত নরকে' প্রকাশের পরপরই হুমায়ূন আহমেদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তার লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, দেয়াল, মাতাল হাওয়া, শঙ্খনীল কারাগার, শ্রাবণ মেঘের দিন, গল্প, কবি, লীলাবতী, গৌরীপুর জংশন, এইসব দিনরাত্রি ইত্যাদি। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে 'আগুনের পরশমণি', 'শ্যামল ছায়া',  দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। টিভি নাট্যকার হিসেবেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। 

আশির দশকের মাঝামাঝি তার রচিত প্রথম ধারাবাহিক টিভি নাটক 'এইসব দিনরাত্রি' তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সংখ্যায় বেশী না হলেও তার রচিত গানগুলোও জনপ্রিয়তা। উপন্যাসে ও নাটকে তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো বিশেষ করে 'হিমু', 'মিসির আলী', 'শুভ্র' তরুণ-তরুণীদের কাছে হয়ে ওঠে অনুকরণীয়।

তার অসামান্য সাহিত্যকীর্তি বাঙালি ও বাংলাদেশের সম্পদ। কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে 'একুশে পদক' লাভ করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।

উল্লেখ্য হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আজ নুহাশপল্লীতে থাকছে নানা আয়োজন। পাশাপাশি লেখকের জন্মস্থানসহ সারা দেশেই থাকছে  হুমায়ূন ভক্তদের নানা অনুষ্ঠান। বিশেষ করে আজকে চ্যানেল আই আয়োজন করেছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে 'গান দিয়ে শুরু'র বিশেষ পর্ব। অনুষ্ঠানে হুমায়ূন আহমেদ-এর গানের বিশেষ পরিবেশনা। দুপুর ১টা ০৫ এ প্রচার হবে 'এবং সিনেমার গান'। এখানেও হুমায়ূন আহমেদের গানের বিশেষ পরিবেশনা থাকবে। বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ইফতেখার মুনিমের প্রযোজনায় হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও উপন্যাসের জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর অংশগ্রহণে থাকছে বিশেষ বিতর্ক অনুষ্ঠান 'প্রয়াণের একযুগ পর আমরা'।

Comments

The Daily Star  | English

Jatiyo Party's office set on fire in Khulna

Protesters vandalised the Jatiyo Party office in Khulna's Dakbangla area last evening

1h ago