‘জেলখানায় রাত জেগে মিসির আলী সমগ্র পড়ে শেষ করেছিলাম’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'সঞ্চয়িতা' হাতে নিয়ে সম্প্রতি একাধিক ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনি। পোস্টের নিচে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য আসছে, যার বেশিরভাগই ইতিবাচক।
এ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, 'রবীন্দ্রনাথ আমার অসম্ভব প্রিয় লেখক। প্রিয় লেখক আরও আছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের যে কোনো লেখা খুব টানে। তার বেশিরভাগ বই আমি শেষ করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'রবীন্দ্রনাথের কবিতা কিংবা গল্প-উপন্যাস যাই পড়ি, মন ভালো হয়ে যায়। আমার সন্তান যখন গর্ভে ছিল, তখন প্রচুর সময় কাটিয়েছি বই পড়ে। তাছাড়া বই পড়ার নেশাটা ছোটবেলা থেকেই আমার মধ্যে পেয়ে বসেছে।'
'শুটিংয়ে যখনই গিয়েছি আমার ব্যাগে একাধিক বই নিয়েছি। বই ছাড়া কখনো শুটিংয়ে যাইনি। অবসর পেলেই পড়ার মধ্যে ডুব দিতাম,' যোগ করেন পরীমনি।
পরীমনির মতো বই পড়ার নেশা তার স্বামী নায়ক শরিফুল রাজেরও আছে। রাজও প্রচুর বই পড়েন বলে জানালেন পরীমনি।
পরীমনি জানান, রাজ যখন শুটিংয়ে যান, তখন তার ব্যাগেও বেশ কয়েকটি বই থাকে।
'ভালো লাগে যখন দেখি রাজও অনেক বই পড়ে এবং শুটিংয়ে যাবার সময় ব্যাগে একাধিক বই নিয়ে যায়,' বলেন পরীমনি।
অন্যদিকে হুমায়ুন আহমেদ ও মুহাম্মদ জাফর ইকবাল অন্যতম প্রিয় লেখক পরীমনির। এই দুই লেখকের অসংখ্য বই পড়ে শেষ করেছেন বলে জানান তিনি।
মুহাম্মদ জাফর ইকবালের রাতুলের দিন রাতুলের রাত উপন্যাসটি দুইবার পড়েছেন তিনি।
পরীমনি বলেন, 'কখনো ভাবিনি রাতুলের দিন রাতুলের রাত উপন্যাস থেকে সিনেমা হবে এবং সেখানে আমি অভিনয় করব।'
রাতুলের দিন রাতুলের রাত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন সিনেমা। সিনেমাটি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এই সিনেমায় পরীমনির বিপরীতে অভিনয় করেছেন সিয়াম।
হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ার প্রসঙ্গ তুলে পরীমনি আরও বলেন, 'জেলখানায় থাকার সময় হুমায়ুন আহমেদের মিসির আলী সমগ্র পেয়েছিলাম। সে সময় জেলখানায় রাত জেগে হুমায়ুন আহমেদের মিসির আলী সমগ্র পড়ে শেষ করেছিলাম। মিসির আলী চরিত্রটি সত্যিই অসাধারণ। পুরো সমগ্র না পড়লে জানা হতো না।'
'হিমু চরিত্রটিও আমার ভালো লাগে। হিমুর বই যত পড়ি ততই মুগ্ধ হই,' বলেন পরীমনি।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের মধ্যে সুনীল, শীর্ষেন্দু, সমরেশ মজুমদারের লেখা জনপ্রিয় সব বই পড়ে শেষ করেছেন পরীমনি।
তিনি বলেন, 'এই তিন লেখকের লেখাও আমাকে টানে। তিন জনের লেখা তিন রকম। আমি সময় পেলেই তাদের লেখা পড়ি।'
সবশেষে পরীমনি জানান, রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা তার সবচেয়ে প্রিয় উপন্যাস। এই উপন্যাসের লাবণ্য চরিত্রের প্রতি তার দুর্বলতা অনেক দিন ধরে।
কলকাতায় শেষের কবিতা নিয়ে সিনেমা হওয়ার কথা ছিল, যেখানে লাবণ্য চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল পরীমনির।
কিন্তু করোনার কারণে ওই সিনেমাটি আর হয়নি।
পরীমনি বলেন, 'আমাদের দেশে কেউ যদি শেষের কবিতা উপন্যাস থেকে সিনেমা নির্মাণ করেন, আমাকে প্রস্তাব দেব, লাবণ্য করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাব।'
'শেষের কবিতার লাবণ্য আমার স্বপ্নের চরিত্র, অনেক প্রিয় চরিত্র। শেষের কবিতার লাবণ্য হতে চাই। নিজেকে লাবণ্য ভাবতে ভালো লাগে,' যোগ করেন তিনি।
Comments