ঢাকায় সাশ্রয়ী খরচে দাঁতের ভালো চিকিৎসা কোথায় পাবেন

দাঁতের চিকিৎসা। ছবি: স্টার

ঢাকার বাসিন্দা রহিমা সুলতানা সম্প্রতি দাঁতের সমস্যা নিয়ে জরুরিভাবে বাসার কাছে চিকিৎসকের কাছে যান। 

তার দাঁতের ক্ষয়প্রাপ্ত টিস্যুগুলো সরিয়ে ফিলিং করে দেন চিকিৎসক। এতে তার খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। পুরো দাঁত তুলতে গেলে খরচ হতো ৫ হাজার টাকা। 

কিছুদিন পর আবারও তার দাঁতে ব্যথা শুরু হয় এবং ফিলিং উঠে যেতে শুরু করে। 

পেশায় গৃহকর্মী রহিমার মতো স্বল্প আয়ের মানুষদের বেশিরভাগেরই স্বাস্থ্যসেবার জন্য টকা বরাদ্দ থাকে না। 

শেষ পর্যন্ত বারডেম হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটে যান রহিমা। সেখানে চিকিৎসক তার আক্রান্ত ৩টি দাঁত তুলে ফেলেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দেন। 

এজন্য সুলতানার খরচ হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টাকা। বারডেমের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন সুলতানা। 

সারা বিশ্বেই দাঁতের চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। ঢাকাও এর ব্যতিক্রম নয়। 

তাহলে সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত দাঁতের চিকিৎসার জন্য রোগীরা কোথায় যাবে? 

সরকারি হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট, ডেন্টাল কলেজ এবং আধা-সরকারি হাসপাতালগুলো তুলনামূলক কম খরচে ভালো চিকিৎসা দিয়ে থাকে। 

এর মধ্যে বারডেম এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল সাশ্রয়ী ব্যয়ে মানসম্মত চিকিৎসার জন্য উল্লেখযোগ্য দুটি প্রতিষ্ঠান। 

যে কেউ বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন। প্রথমে হাসপাতাল থেকে একটি স্লিপ সংগ্রহ করতে হবে এবং তারপর নির্দেশিত ডেন্টাল কেয়ার ইউনিটে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

এ হাসপাতালটিতে কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি অ্যান্ড এন্ডোডোনটিকস, পেডিয়াট্রিক ডেনটিস্ট্রি, অর্থোডোনটিকস,  ডেন্টোফেসিয়াল অর্থোপেডিক্স, প্রোস্টোডনটিকস, ডেন্টাল সার্জারি ইত্যাদি বিভাগ আছে।

বারডেম হাসপাতালের কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি অ্যান্ড এন্ডোডোনটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাফিয়া নাজনীন বলেন, 'আমরা একটি অলাভজনক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। দরিদ্র ও দুস্থ রোগীদের সহায়তার জন্য বারডেমে একটি সমাজকল্যাণ বিভাগ রয়েছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নারী-পুরুষ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সব ডায়াবেটিস রোগীদের পুনর্বাসনসহ সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করাই আমাদের লক্ষ্য।'

এই সরকারি এবং আধা-সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ দাঁতের ডাক্তার আছেন। এখানকার চেম্বার ও সরঞ্জাম অটোক্লেভ স্টিম স্টেরিলাইজার ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করা হয়।

ডা. রাফিয়া নাজনীন বলেন, 'স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখাও আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোর একটি। দাঁতের চিকিৎসা করতে করতে ডাক্তারের দক্ষতা বাড়ে, এটি কেবল জ্ঞান ব্যবহারের বিষয় নয়। এই দক্ষতা তৈরি হতে সময় লাগে। দৈনিক আমরা ৩০-৪০ জন রোগী দেখি। অন্যান্য বিভাগেরও নিজস্ব রোগী আছে।'

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য অন্য হাসপাতালের তুলনায় বারডেম অনেক বেশি আস্থার একটি জায়গা। 

ডা. রাফিয়া নাজনীন বলেন, 'আমাদের এখানে রোগীদের ফি'র ওপর ভর্তুকি দেওয়া হয় এবং আমাদের বেতনও সরকার দেয়। সরকারি হাসপাতালে কাজ করা মর্যাদাপূর্ণ। অর্থ উপার্জন আমাদের অগ্রাধিকার নয়।'

রহিমা সুলতানার মতো স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য বারডেম এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল আশীর্বাদস্বরূপ। 

অন্যান্য হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকের তুলনায় এই হাসপাতালগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। 

মূল লেখা: আরবিআর

অনুবাদ: আহমেদ হিমেল

Comments

The Daily Star  | English

Four top NBR officials sent into retirement

The four reportedly supported the recent protest by the NBR officials

20m ago