শীতকালে ঠান্ডা নাকি গরম পানিতে গোসল করা ভালো

শীতকালে গোসল
ছবি: সংগৃহীত

শীতকালে গোসল করাটা অনেকের কাছে ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠে। অনেকে ভেবে পান না ঠান্ডা নাকি গরম পানিতে গোসল করবেন।

শীতকালে কেমন পানিতে গোসল করা ভালো জেনে নিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের কাছ থেকে।

শীতকালে ঠান্ডা নাকি গরম পানিতে গোসল করবেন

ডা. আতিকুর রহমান বলেন, শীতকালে গোসল না করার অনীহা থাকে অনেকের মধ্যে, এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। গোসল না করার ফলে ত্বকের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

শীতকালে কুসুম গরম পানিতে গোসল করা ভালো। এতে শরীর চাঙা হয়, পেশির রিল্যাক্সশন হয়, ক্লান্তি দূর হয়, রক্ত চলাচল বাড়ে, গোসলের অনীহা দূর হয়, অনিদ্রা দূর হয়, ত্বক ভালো থাকে।

তবে ডা. আতিকুর রহমান বলেন, বেশি গরম পানিতে গোসল করা যাবে না। বেশি গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের ফলিকগুলো নষ্ট হতে পারে। মুখমণ্ডলের চামড়া খুব সংবেদনশীল হয়, তা পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেজন্য সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

আবার অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে অনেকের ফুসফুসে সমস্যা হতে পারে, শরীরের তাপমাত্রা হুট করে নেমে যেতে পারে, পেশি সংকুচিত হয়ে যায়, ঠান্ডা, টনসিল, সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা রয়েছে।

এজন্য শীতকালে বেশি ঠান্ডা পানিতেও গোসল করা যাবে না, আবার বেশি গরম পানিতেও না। হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করা শ্রেয়।

শীতকালের গোসলে কী কী খেয়াল রাখা উচিত

১. শীতকালে শিশু এবং বয়স্কদের গোসলের ক্ষেত্রে কেয়ারগিভারদের খেয়াল রাখতে হবে পানি যাতে খুব বেশি গরম না হয়। গোসলের আগে হাত দিয়ে পানির তাপমাত্রা দেখে নিতে হবে।

২. মাটির চুলা, গ্যাস, ইলেকট্রনিক থার্মাল বা যেকোনো উপায়ে গোসলের পানি গরম করার সময় বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। সেগুলো যাতে না হয় সেজন্য সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। বয়স্ক ও শিশুদের দূরে রাখতে হবে গরম পানি থেকে। বালতিতে পানি ঢালার সময় সর্তক থাকতে হবে।

৩. গরম পানিতে গোসল করতে গিয়ে পুড়ে যাওয়ার ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে নজর দিতে হবে।

৪. গ্রামাঞ্চলে গোসলের আগে শিশুদের বা বড়রা তেল মেখে শরীরে রোদ লাগায়। এর কিছু উপকারিতা আছে। এতে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, ত্বক ভালো থাকে।

৫. শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। সেজন্য গোসলের পর শরীরে লোশন ব্যবহার করা শ্রেয়।

৬. গোসলের সময় প্রথমেই মাথায় পানি দেয়া যাবে না। প্রথমে হাতে, পায়ে শরীরে পানি দিয়ে শেষে মাথায় পানি দিতে হবে। হঠাৎ মাথায় গরম পানি দিলে যাদের প্রেশার থাকে তাদের প্রেশার বেড়ে যেতে পারে। আবার ঠান্ডা পানি দিলে রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যেতে পারে। হার্টের সমস্যা যাদের আছে তাদের হঠাৎ করে অ্যাটাক হতে পারে। সেজন্য শরীরে পানির তাপমাত্রা সইয়ে নিয়ে তারপর মাথায় দিতে হবে।

৭. মাথায় হালকা কুসুম গরম পানি দেওয়া যাবে।

৮. গোসলের পর ভালোভাবে শরীর মুছে নিতে হবে।

৯. অ্যাথলেটরা ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারবেন।

প্রতিদিন গোসল করতে হবে কি

শীতের সময়ও প্রতিদিন গোসল করা উচিত। এতে শরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। গোসল না করলে শরীরে নানাভাবে ময়লা জমবে, ঘাম হবে, বিভিন্ন রোগবালাই সৃষ্টি হতে পারে, ত্বকে ইনফেকশন হতে পারে। কোনো কারণে দুই-তিন দিন গোসল করতে না পারলে নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, পরিধানের কাপড় পরিবর্তন করতে হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

1h ago