চোখ জুড়াবে মানিকগঞ্জের যে ৫ স্থান

ছব্রি; নাহার গার্ডেনের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় রয়েছে দেখার মতো উল্লেখযোগ্য স্থান। সেগুলোর কোনোটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অনন্য, কোনোটি আবার ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে যুগ যুগ ধরে মানুষকে মুগ্ধ করে আসছে। ঢাকা থেকে ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মানিকগঞ্জ জেলা বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা ও জমিদার বাড়ির জন্য বিখ্যাত।

চলুন জেনে নিই মানিকগঞ্জের দর্শনীয় কিছু স্থানের আদ্যোপান্ত-

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় অবস্থিত বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দেশের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায় ১৬ হাজার ৫৫৪ বর্গমিটার জমির ওপর অবস্থিত ৭টি কারুকার্যখচিত দালানে পরিবেষ্টিত এই জমিদারবাড়ি। কালের বিবর্তনে ভবনগুলো ধ্বংসের মুখে পড়লেও বালিয়াটি জমিদার বাড়ির নিখুঁত নির্মাণশৈলী নজর কাড়বে যেকোনো দর্শনার্থীর।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। ছবি: হিমেল হাসনাত রাফি

ঢাকার গুলিস্তান থেকে পাটুরিয়া মানিকগঞ্জের বাসে চেপে মাত্র দুই ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন কালামপুর। কালামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা সাটুরিয়ার বাসে করে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন বালিয়াটি প্রাসাদ।

যদি গাবতলী-আমিন বাজার থেকে বাসে উঠতে চান সেক্ষেত্রে সরাসরি সাটুরিয়ার বাস পাবেন। সাটুরিয়া নেমে ব্যাটারিচালিত ভ্যানগাড়িতে মাত্র ৫ মিনিটে পৌঁছে যাবেন বালিয়াটি জমিদারবাড়ি। চাইলে বঙ্গবাজার থেকেও সরাসরি সাটুরিয়ার বাসে উঠতে পারেন।

তেওতা জমিদার বাড়ি

তেওতা জমিদার বাড়ি দেশের পুরাকীর্তি স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখনও কালের সাক্ষী হয়ে মানুষের মন জয় করে যাচ্ছে এটি।

তেওতা জমিদার বাড়ি। ছবি: হিমেল হাসনাত রাফি

শিবালয় উপজেলায় যমুনা নদীর তীরে সবুজ-শ্যামলে ঢাকা তেওতা গ্রামে এই প্রাসাদের অবস্থান। জমিদার বাড়ির আঙিনায় নির্মিত নবরত্ন মঠ এই প্রাসাদকে আরও ঐশ্বর্যময় করে তুলেছে। জমিদার শ্যামশংকর রায়ের প্রতিষ্ঠিত নবরত্ন মঠটি অনেকদূর থেকেই দেখা যেত একসময়।

ঢাকা থেকে বাসে করে আরিচা ঘাট আসতে হবে। এরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে তেওতা গ্রামে পৌঁছাতে পারেন। এছাড়া নদী পথেও এখানে আসা যাবে। সেক্ষেত্রে নৌকায় আরিচাঘাটে এসে নামতে হবে।

বেতিলা জমিদার বাড়ি

বেতিলা জমিদার বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জ সদর থানার বেতিলা গ্রামে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। বেতিলা জমিদার বাড়ির নির্মাণ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই বাড়ির ইতিহাস নিয়ে জনশ্রুতি আছে যে, সত্য বাবু নামের একজন বণিক আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে এখানে এই বাড়িটি নির্মাণ করেন। তার বসতবাড়িই লোকমুখে বেতিলা জমিদার বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আবার স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, কলকাতার বণিক জ্যোতি বাবু ছিলেন বেতিলা জমিদার বাড়ির পূর্বপুরুষ।

মত্ত মঠ

মত্ত মঠ। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত মত্ত মঠ প্রায় আড়াইশো বছর আগে নির্মিত হয়েছে। নিটোল দিঘির পাড়ে ১৫ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত এই মঠের উচ্চতা প্রায় ২০০ ফুট। এটি নির্মাণের জন্য ইরাক থেকে কারিগর আনা হয়েছিল। জানা যায়, মানিকগঞ্জের পটল গ্রামে হেমসেন নামে একজন অত্যাচারী জমিদার তার বাবার শেষকৃত্য এখানে সম্পন্ন করে পরে এ মঠ নির্মাণ করেন।

নাহার গার্ডেন

নাহার গার্ডেন। ছবি: সংগৃহীত

গ্রামীণ নিরিবিলি পরিবেশে পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে চাইলে চলে যেতে পারেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কামতা গ্রামে অবস্থিত নাহার গার্ডেনে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে এটির অবস্থান। এখানে ছোট-বড় মিলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় তিন হাজার পাখি রয়েছে। দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে নয়টি উট, একটি ইমু ও আটটি ময়ূর। এ ছাড়া শিশুদের জন্যে রয়েছে বড় একটি শিশু পার্ক। এখানে আরও আছে ছোট-বড় চারটি পুকুর এবং টাইটানিকের আদলে নির্মিত একটি জাহাজ।

নাহার গার্ডেনে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। এখানে রয়েছে ৭টি পিকনিক স্পট। লোকসংখ্যা ও সময়ের ভিত্তিতে এই পিকনিক স্পটগুলো ৬ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ভাড়া নেওয়া যায়।

 

Comments

The Daily Star  | English

One killed in multi-vehicle crash on Dhaka-Mawa highway

The chain of crashes began when a lorry struck a private car from behind on the Mawa-bound lane

31m ago