ছোট বিষয়েও মানসিক চাপ?

মানসিক চাপ
ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি ইদানীং ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মানসিক চাপে পড়ে যাচ্ছেন? হাত থেকে আচমকা কিছু পড়ে গেল, অথবা ফোনে চার্জ হচ্ছে না, বা ইন্টারনেটে হঠাৎ ধীরগতি- এ জাতীয় ছোট ছোট সমস্যাও খুব চাপে ফেলে দিচ্ছে? আমাদের এখন যেমন রুদ্ধশ্বাসে কেবল ছুটে চলার জীবন, তাতে এমনটা অনুভব করা অস্বাভাবিক নয়।

কিছু বিষয়ে মনোযোগ দিলে এই সমস্যা দূরে রাখতে পারবেন।

নেপথ্যে নজর দিন

এই যে আপনি মাঝেমাঝেই ছোট বিষয়ে মানসিক চাপ অনুভব করছেন, এর পেছনে আরও গভীর কারণ রয়েছে। হতে পারে আপনি অতিরিক্ত পরিশ্রম করছেন, হয়তো পারিবারিক কোনো সমস্যা হচ্ছে অথবা আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন। এই বড় কারণগুলো সবসময় আপনার মনের ভেতর রয়ে যাচ্ছে। হয়তো এগুলোর কারণেই ছোট বিষয়গুলোও আপনার জন্য অসহ্য হয়ে যাচ্ছে, আপনার মনে বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে।  

এগুলো হয়তো মনের অজান্তেই গভীর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ব্যস্ততার মধ্যেও সমস্যাগুলো মনের মধ্যে সবসময় ঘুরপাক খাচ্ছে, যা থেকে চাইলেও বের হতে পারছেন না।

এসব কিছুর সেরা একটি সমাধান হতে পারে দিনে নির্দিষ্ট সময়ে মেডিটেশন। এটি আপনার মনের ভেতরের বিচ্ছিন্ন চিন্তাগুলোকে একপাশে ঠেলে সরিয়ে দেবে আর আপনিও আপনার কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন। মেডিটেশনের ফলে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আরও প্রসারিত হবে এবং অনুভূতিগুলোও বিকশিত হবে। এতে করে ছোট ছোট সমস্যাগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন।

মস্তিষ্কের বোঝা হালকা করুন  

মাঝেমাঝেই আমরা নিজেরাই আমাদের এত মানসিক চাপের কারণ। এত চিন্তা দিয়ে মগজকে ভারী করে ফেলা এবং দুশ্চিন্তা ও চাপ বয়ে বেড়ানোর অর্থ হয় না। তাই চেষ্টা করতে হবে এত ধরনের চিন্তা মস্তিষ্কে বয়ে না আনার।

এজন্য কোনো ঘটনায় প্রথমে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, সেটি নিয়ে এত স্ট্রেস কিংবা মানসিক চাপ নেওয়ার দরকার আছে কি না। খেয়াল করে দেখুন, অযথা কত ছোট ছোট বিষয় মাথায় নিয়ে ঘুরছেন। নেতিবাচক চিন্তা এবং অনুমান থেকে নিজের মনকে সরিয়ে আনতে পারলে দেখবেন বোঝা কতটা হালকা লাগছে।

সমস্যা নয়, সমাধানে মনোযোগ দিন

আমরা জীবনের সমস্যাগুলো নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করি, সেগুলো যতই ছোট হোক না কেন। আমরা যতটা সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করি, সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতেও এত সময় ও শক্তি ব্যয় করি কি? এই কাজটিই করতে হবে।

এটি ঠিক যে, প্রতিটি পরিস্থিতির ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তবে চাইলেই আমরা সমস্যাগুলোর সমাধান নিজেদের মতো বের করে নিতে পারি। জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার মানে কিন্তু দুশ্চিন্তার জালে আটকে থাকা নয়। তাই সমস্যাগুলোকে ভাগ করে নিয়ে এরপর একটু একটু করে সমাধান করাটাই আসল কাজ।

নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন

ছোট ছোট ভুলের জন্য নিজেকে প্রতিনিয়ত দোষারোপ করতে থাকেন অনেকেই। কিন্তু এটা আরও চাপের দিকে ঠেলে দেয়। তাই নিজের প্রতি নিজের সহানুভূতিশীল হওয়াটা জরুরি। কারণ জীবন খুব ছোট, নিজেকে ভালোবাসুন। খুব কাছের মানুষজনের কোনো ছোট ভুল আপনি যেমন সহানুভূতির সঙ্গে দেখেন, নিজের সঙ্গেও একই আচরণ করুন।মানসিক চাপ কমাতে সবসময় নিজের ভুল নিয়ে বিচার করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসাটা খুব জরুরি।

অনুবাদ করেছেন আসিয়া আফরিন চৌধুরী

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago