প্রতিকূল সময়ে মানসিক চাপ সামলাতে যা করবেন

মানসিক চাপ সামলানোর উপায়
ছবি: সংগৃহীত

আজকাল প্রায়ই শোনা যায় কেউ মানসিক চাপে ভুগছেন। পড়াশোনা, অফিসের কাজ, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, পারিবারিক কলহ, দুর্ঘটনা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বা ব্যক্তিগত সমস্যা- এগুলো থেকে সৃষ্টি হতে পারে মানসিক চাপ এবং যেকোনো বয়সের মানুষের উপরেই এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের চিন্তা মাথায় আসা খুবই স্বাভাবিক, কিন্তু যখন সেই চিন্তার জন্য আমরা নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি এবং যখন তা আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে সেটি আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এটিই মানসিক চাপ।

মানসিক চাপের বেশ কয়েকটি শারীরিক লক্ষণ রয়েছে। এর মধ্যে মাথা ব্যথা, ঘুম না হওয়া, বুক ধড়ফড় করা, বমি বমি ভাব এবং খাওয়ার রুচি চলে যাওয়া অন্যতম। এ ছাড়া মানসিক চাপে ভোগা ব্যক্তির মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, সব কাজেই বিরক্তি প্রকাশ করেন, কোনো কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না এবং ধীরে ধীরে নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নেন। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপে ভোগা ভীষণ ক্ষতিকর। তাই মানসিক চাপ মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কীভাবে এরকম চাপ মোকাবিলা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন তাই জানব আজ।

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

নিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম আপনাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে স্বস্তি দেবে। চিন্তা দূর করে মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে। তাই নিয়মিত এ ধরনের ব্যায়াম করা উচিত। মানসিকভাবে কোনো চিন্তা আপনার মধ্যে চাপ সৃষ্টি করলে নাক দিয়ে ৫ সেকেন্ড ধরে নিশ্বাস নিন এবং কিছুক্ষণ নিশ্বাস ধরে রেখে আস্তে আস্তে ৫ সেকেন্ড ধরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এই প্রক্রিয়াটি তাৎক্ষণিকভাবে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে, যা মানসিক চাপমুক্ত করে স্বস্তি দেয়। সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত এসব ব্যায়াম করতে পারেন।

পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ও বিশ্রামের অভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে, অথবা বাড়তে পারে। ঘুম আমাদের সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে নতুন করে চিন্তা করার শক্তি যোগায়। দিনের পর দিন ঠিক মতো না ঘুমালে মানসিক চাপ বাড়তে পারে। শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে বিশ্রাম ও ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘুমের সময়ের দিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। রাত জাগা মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। তাই প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে।

নিজের পছন্দের কাজ করুন

ধরুন, আপনি কোনো কিছু নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছেন এবং কোনোভাবেই সেই চিন্তাটি মাথা থেকে বের করতে পারছেন না এবং কোনো কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না। এ সময় নিজের পছন্দের কোন কাজ করুন। সেটি হতে পারে বই পড়া, গান শোনা, ছবি আঁকা বা রান্না করা। আপনি যা করতে ভালোবাসেন সেই সময়টিতে তাই করুন।

বিরতি নিন

মানসিক চাপ আপনার দৈনন্দিন কাজকে বাধাগ্রস্ত করলে হতাশ না হয়ে নিজেকে সময় দিন। ধীরে ধীরে নিজেকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করুন। কোনো কাজ করতে করতে চাপ অনুভব করলে কিছুটা বিরতি নিন এবং আবার নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করুন। মানসিক চাপের মধ্যে থেকে কাজ করলে কাজের ফলাফল ভালো হবে না। তাই বিরতি নিয়ে কাজ করুন।

খাবারের তালিকায় পরিবর্তন

খাদ্যাভ্যাস শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। প্রতিদিন সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া উচিত এবং খাবার তালিকায় অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। শরীরের জন্য ক্ষতিকর খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

যদি কোনোভাবেই মানসিক চাপ মোকাবিলা করা না যায় তবে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এটি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। মানসিক চাপ কখনো কখনো খুবই ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। তাই এই চাপ নিজে মোকাবিলা না করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক।

 

Comments

The Daily Star  | English

Thailand sees growing influx of patients from Bangladesh

Bangladeshi patients searching for better healthcare than that available at home are increasingly travelling to Thailand instead of India as the neighbouring country is limiting visa issuances for Bangladeshi nationals.

11h ago