ওমেগা-৩ এর অভাবে কী হয়, কোন খাবারে পাবেন

ওমেগা ৩
ছবি: সংগৃহীত

ওমেগা-৩ শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড। খাবারের মাধ্যমে এটি গ্রহণ করতে হয়। শরীরে ওমেগা-৩ এর অভাব মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন স্পেশালাইজড গ্যাস্ট্রোলিভার কেয়ারের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান।

ওমেগা-৩ কী

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, ওমেগা-৩ হচ্ছে শরীরের জন্য এক ধরনের অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আমাদের শরীরে তৈরি হতে পারে না। তাই বাইরের খাবারের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।

ওমেগা-৩ তিন ধরনের হয়। যেমন-

১. আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড: যা উদ্ভিদজাত খাবারে পাওয়া যায়।

২. ইকোসাপেন্টাইনয়িক অ্যাসিড: যা প্রাণিজ চর্বি থেকে পাওয়া যায়। হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৩. ডোকোসাহেক্সায়েনোইক অ্যাসিড: এটিও প্রাণিজ চর্বি থেকে পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ডোকোসাহেক্সায়েনোইক অ্যাসিড প্রয়োজন হয়।

ওমেগা-৩ এর উৎস

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, উদ্ভিজ্জ এবং প্রাণিজ উভয় উৎস থেকেই ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড সিড বা বীজ জাতীয় খাবার থেকে এটি পাওয়া যায়। যেমন- তিসি, তিল, চিয়া সিড। আখরোটে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড রয়েছে। এছাড়া ফলের মধ্যে অ্যাভোকাডো, পেঁপে, কিউই, কলায় ওমেগা-৩ আছে।

প্রায় সব ধরনের সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। এমনকি ইলিশ মাছেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। টুনা মাছ, কড মাছের তেলে, সামুদ্রিক শৈবাল স্পিরুলিনাতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়।

কেন প্রয়োজন

স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ, মস্তিষ্কের নিউরনগুলো সুস্থ রাখতে, স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখতে হলে ওমেগা-৩ সহায়ক। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ওমেগা-৩ বেশি থাকলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। পিরিয়ডের সময় ক্র্যাম্প, ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ওমেগা-৩। প্রদাহ কমাতে ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় ভ্রুণের স্নায়ু বিকাশে সহায়ক।

ওমেগা-৩ এর অভাবে কী হয়

১. স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় ওমেগা-৩ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ওমেগা-৩ এর অভাবে বিষণ্নতা, হতাশা, উদ্বেগসহ নানা মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

২. ওমেগা-৩ এর অভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে পারে।

৩. গর্ভাবস্থায় ওমেগা-৩ এর অভাবে ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত হতে পারে।

৪. ওমেগা-৩ শরীরে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে। এর অভাবে শরীরে ব্যথা ও প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে।

৫. ত্বক ও চুলের সমস্যা হয়। ত্বক শুষ্ক, ফ্যাকাশে হয়ে যায়। চুল শুষ্ক হয়ে যায়, চুল পড়ে যায়, পাতলা হয়ে যায়।

৬. জয়েন্টে ব্যথা, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসও হয়। গাঁটে ব্যথা, শুষ্ক হয়ে যাওয়া এবং জেলের পরিমাণ কমে যাওয়ার মত লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় ওমেগা-৩ এর অভাবে।

৭. ওমেগা-৩ যেহেতু শরীরে তৈরি হয় না, তাই অনেক ধরনের হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ক্লান্তি ও অবসাদ দেখা দেয়।

৮. ওমেগা-৩ এর অভাবে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়, মনোযোগ কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Sinner dethrones Alcaraz to capture maiden Wimbledon crown

Jannik Sinner downed Carlos Alcaraz 4-6, 6-4, 6-4, 6-4 on Sunday to win his first Wimbledon title, gaining sweet revenge for his painful defeat in the French Open final.

6h ago