ঢাকায় উটের দুধের চা পাবেন যেখানে
এই রমজানে ইফতারের পর এক কাপ দুধ চা খেতে চাইবেন না, এমন মানুষ খুব কম আছেন দেশে। একজন প্রকৃত চাপ্রেমীর সারাদিনের ক্লান্তিকে নিমিষেই দূর করে দিতে পারে কড়া লিকারের ও ঘন দুধের এক কাপ চা। আর সেটা যদি হয় ভিন্ন স্বাদের 'উটের দুধের চা', তাহলে তো কথাই নেই!
যারা ভোজনরসিক কিংবা নতুন কিছু চেখে দেখতে পছন্দ করেন তারা ছুটে যান বিভিন্ন জায়গায় নতুন অভিজ্ঞতার খোঁজে। সেই রকম এক নতুন অভিজ্ঞতা পেতে চাইলে যেতে হবে গুলশান ২ এর ল্যাবএইড হাসপাতালের অপর পাশের ৫২ নম্বর সড়কের 'ব্যাচেলর এক্সপ্রেস' নামের ক্যাফেতে। ঢাকার প্রথম উটের দুধ চা পাওয়া যাচ্ছে এই ক্যাফেতেই। ক্যাফেটি চালু হয়েছে গত ৬ ফেব্রুয়ারি।
মরুভূমির জাহাজখ্যাত এই উটের দুধ নিয়ে আসা হচ্ছে বাংলাদেশে। তাতেই বানানো হচ্ছে ভিন্ন স্বাদের ও মধ্যপ্রাচ্যে বহুল প্রচলিত উটের দুধের চা। দুই তরুণ বন্ধু মাহবুব হাসান ও আমিনুল ইসলাম 'ব্যাচেলর এক্সপ্রেসে'র উদ্যোক্তা।
'এত কিছু থাকতে উটের দুধের চা কেন?' জানতে চাইলে মাহবুব হাসান বলেন, 'আমাদের দেশে এই দুধ পাওয়া যায় না। ভিন্ন রকমের স্বাদ, খেতে সুস্বাদু আর এর বেশ কিছু উপকারিতাও আছে। এ ছাড়া সবাই নতুন কিছু করতে চায়। ভালো চললে মানুষ আসবে। তখন এই চায়ের পাশাপাশি এখানকার অন্য খাবারও খাবে।'
আরবদেশের সহভলভ্য এই দুধ আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। তাহলে কীভাবে তারা নিয়ে আসছেন এই দুধ? উত্তরে মাহবুব হাসান বলেন, 'আরব দেশে আমার ব্যবসা আছে। আমি আসার সময় ৫ কেজি নিয়ে আসি। সেই দিয়েই চলছে। তবে এখানকার কিছু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ঈদের পর থেকে তারা আমাদের দুধ দেবেন।'
কথা বলতে বলতেই প্যাকেটের প্রক্রিয়াজাতকৃত দুধ দেখাচ্ছিলেন হাসান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্যামেলিসাস ব্র্যান্ডের তৈরি গুঁড়ো দুধ দিয়ে চা বানান তারা।
'ব্যাচেলর এক্সপ্রেসে' প্রতি কাপ উটের দুধের চায়ের দাম ৪০০ টাকা। বর্তমান বাজার এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই দামটা বেশি হয়ে গেল কি না জিজ্ঞেস করতেই মাহবুব হাসান বলেন, 'এই দুধ নিয়ে আসার জন্য অনেক খরচ হয়ে যায়। প্রতি কেজি গুঁড়ো দুধের দাম পড়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া এটা কেউ প্রতিদিন খাবে না। সেখান থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে এর দাম খুব বেশি না।'
ক্যাফেতে কথা হয় একটি বায়িং হাউজের কর্মকর্তা কামাল উদ্দীনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, 'আমি পরিচিত একজনের কাছ থেকে শুনে দুই বন্ধুকে নিয়ে এসেছি।'
চায়ের স্বাদ কেমন এবং সেই স্বাদ অনুযায়ী দাম ঠিক আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'স্বাদটা খুব প্রখর। ভিন্ন রকম লাগছে মুখে, এখানে দুধের পার্থক্যটা স্পষ্ট বুঝতে পারছি। তবে দামের দিক থেকে আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে। ভিন্নতা খুঁজতে পছন্দ করি বলে এই দামে চা খেয়ে দেখলাম।'
তার বন্ধু নাসির উদ্দীন বাদল বলেন, 'আসলে প্রথমবার খাচ্ছি, স্বাদটা আমাদের দেশের মানুষের জন্য ঠিকঠাকই বলে মনে হচ্ছে। আর পরিবর্তন করার জায়গা বললে লিকারের পরিমাণটা আরেকটু কম হলে হয়তো ভালো। তবে খেতে অসাধারণ লাগছে, ভিন্ন রকমের।'
দেশে কোনোভাবে এই দুধ সংগ্রহ করা যায় কি না জানতে চাইলাম ক্যাফের মালিক মাহবুব হাসানের কাছে।
তিনি বললেন, 'ঢাকার আরামবাগে একটি ফার্ম আছে, যেখানে আমি কথা বলেছি। সামনে তারা আমাদের তরল দুধ দিতে পারবে বলে জানিয়েছে।'
ব্যাচেলর এক্সপ্রেস নামের এই ক্যাফেতে অনান্য হরেক রকমের চাও পাওয়া যায়। এ ছাড়া এখানে পিজ্জা, পাস্তা, বার্গারসহ বিভিন্ন ফাস্টফুড পাওয়া যায়। ক্যাফেটি খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত।
Comments