হাই কোলেস্টেরলে কী খাবেন, কী খাবেন না

কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা

সুস্বাস্থ্যই সুখের মূল। এই সুস্বাস্থ্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন রকমের সমস্যা। তার মধ্যে একটি উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল। 

হাই কোলেস্টেরল কীভাবে বোঝা যায় এবং এতে কী  খাওয়া উচিত এবং কী উচিত না সে বিষয়ে ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নুশরাত জাহান জানিয়েছেন আমাদের।

কোলেস্টেরল কী

কোলেস্টেরল প্রাণীদেহের প্রতিটি টিস্যুতে উপস্থিত এক ধরনের ফ্যাট, যা শারীরবৃত্তীয় কাজে প্রয়োজন হয়। কোলেস্টেরল মানুষের রক্তের প্রোটিনের সঙ্গে মিশে লিপোপ্রোটিন তৈরি করে রক্তে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্টেরয়েড জাতীয় উপাদানের অগ্রদূত হিসেবেকাজ করে। শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল শরীরের জন্য ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

 

 

কোলেস্টেরলের ধরন

কোলেস্টেরল ২ ধরনের। এলডিএল ও এইচডিএল।

এইচডিএল হচ্ছে হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ বেশি ঘনত্বযুক্ত লিপোপ্রোটিন শরীরের জন্য উপকারী। এই কোলেস্টেরল আমাদের কোষঝিল্লির তরলতা বজায় রাখে, পিত্তরস তৈরি করে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি করতে ভূমিকা রাখে।

এলডিএল হচ্ছে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ কম ঘনত্বযুক্ত লিপোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরল। এটি রক্তবাহী নালীগুলোতে জমে গিয়ে রক্তনালীকে সংকুচিত  করে ফেলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

রক্তে লিপোপ্রোটিন অর্থাৎ ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেশি হলে সেটাকে হাই কোলেস্টেরল বলে। হাই কোলেস্টেরল মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়। এটির কারণে হৃদপিণ্ডে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে। কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার বিভিন্ন কারণের মধ্যে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার, ওভার ওয়েট এবং ইনঅ্যাকটিভ ফিজিক্যাল লাইফস্টাইল গুরুত্বপূর্ণ।

নুশরাত জাহান জানান, একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল প্রয়োজন। তবে কারো যদি হৃদরোগ থাকে তাহলে অবশ্যই ২০০ মিলিগ্রামের বেশি কোলেস্টেরল তার জন্য ক্ষতিকর।

হাই কোলেস্টেরলের লক্ষণ

কোলেস্টেরল অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে গেলে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে ঘাম, ক্লান্তি বোধ, দুর্বলতা, ক্ষুধা হ্রাসের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া, চোখের ওপর ও নিচে হলুদ রঙের চর্বি জমা হতে পারে মত মোমের মতো। এ ছাড়া যদি কারো হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, এথোরোস্কেলেরোসিস হওয়ার পর্যায়ে চলে যায়, তখন বুকের বাম পাশে ব্যথা, প্রেসার বেড়ে যাওয়া, অথবা পায়ে ব্যথা এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

কী খাবেন, কী খাবেন না

হাই কোলেস্টেরল থেকে বাঁচতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি। যদি কারো কোলেস্টেরল লেভেল বেড়ে যায় তার স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন গরুর মাংস, খাসির মাংস, বড় চিংড়ি, অতিরিক্ত তেল ও চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া উচিত। এ ছাড়া প্রসেসড ফুড, জাঙ্ক ফুড পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।

সেইসঙ্গে ওমেগা ৩ জাতীয় খাবার যেমন আখরোট, ইলিশ, আঁশ জাতীয় খাবার যেমন শাকসবজি, ডাটা, আপেল, শস্য জাতীয় খাবার যেমন ওটস, লাল আটার রুটি, বার্লি, লাল চাল খাওয়া উচিত। এগুলো রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

তাছাড়া ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। শারীরিক পরিশ্রম এইচডিএল কোলেস্টেরল বা 'ভালো কোলেস্টেরল' বাড়াতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস করুন।

Comments

The Daily Star  | English
Apparel Buyers Delay Price Increases Post-Wage Hike Promise

Garment exports to US grow 17%

Bangladesh shipped apparels worth $5.74 billion in the July-March period to the USA

5h ago