তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপের এই কৌশলগুলো জানেন কি

সঠিক পদ্ধতি বা ভালো মানের পণ্য ব্যবহার না করে মেকআপ করলে মেকআপ গলে যাওয়া, ঘামের সঙ্গে সরে যাওয়া, ছাই বর্ণের হয়ে যাওয়া বা ছোপ ছোপ হয়ে দলা পাকিয়ে যাওয়ার মত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপ
ছবি: সাজ্জাদ ইবনে সাঈদ

বাঙালিদের অনেকেরই তৈলাক্ত হয়ে থাকে। তৈলাক্ত ত্বকে বড় বড় লোমকূপ থাকে এবং তা থেকে ব্রন, ত্বকের ময়লা, ঘাম বের হতেই থাকে। ফলে সঠিক পদ্ধতি বা ভালো মানের পণ্য ব্যবহার না করে মেকআপ করলে মেকআপ গলে যাওয়া, ঘামের সঙ্গে সরে যাওয়া, ছাই বর্ণের হয়ে যাওয়া বা ছোপ ছোপ হয়ে দলা পাকিয়ে যাওয়ার মত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

তাই তৈলাক্ত ত্বকের মেকআপ করার কিছু কৌশল থাকে। আজ তা নিয়েই কিছু টিপস দেওয়া হলো।

ত্বক পরিষ্কার এবং যত্ন

অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে যে, মেকআপ করলেই সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় এবং ত্বকের সমস্যাগুলো মেকআপ করে লুকিয়ে ফেলা যায়। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। সুন্দর মেকআপের জন্য অবশ্যই সবার আগে ত্বক খুব ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। মেকআপ করে তুলে ফেলার পরেও মুখের ত্বক খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া আবশ্যক। তৈলাক্ত ত্বক পরিষ্কারের জন্য তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী ফেসওয়াশ বা ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে, যাতে করে ত্বকের ভেতর থেকে যতটা সম্ভব তেল এবং ময়লা বের হয়ে যায়। এতে করে মেকআপ সুন্দরভাবে ত্বকের সঙ্গে মিশে গিয়ে ন্যাচারাল লুক তৈরি করবে। তাছাড়া মেকআপ দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী থাকবে এবং ছাই বর্ণেরও হবে না।

মেকআপের আগে বরফ ব্যবহার করা

তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপ করার আগে অবশ্যই ২-৫ মিনিট মুখে বরফ ঘষে নেওয়া উচিত। এতে করে মুখের লোমকূপগুলো কিছুটা সংকুচিত হয়ে যায়। তৈলাক্ত ত্বক যেহেতু সবসময় গরম থাকে, বরফ ব্যবহারের ফলে ত্বক কিছুটা ঠান্ডা হয় এবং মেকআপ সুন্দরভাবে মিশতে সাহায্য করে।

 

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

অনেকেই ভেবে থাকেন তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কারণ মুখ থেকে এমনিতেই তেল বের হতে থাকে, ময়েশ্চারাইজার হয়তো আরও বেশি মুখকে তেলতেলে করে ফেলবে। কিন্তু এই ধারণাটিও সম্পূর্ণ ভুল। মেকআপের আগে অবশ্যই ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তৈলাক্ত ত্বকে ওয়াটার বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যাবে না, জেল বেসড ব্যবহার করতে হবে। তবে অবশ্যই তার আগে একটি টোনার ব্যবহার করে নিতে হবে।

প্রাইমার ব্যবহার করা

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পর অবশ্যই একটি ভালো মানের প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। প্রাইমার ব্যবহারের ফলে মেকআপ দীর্ঘক্ষণ ভালো থাকে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাটিফাইং প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। ম্যাটিফাইং প্রাইমার ত্বককে মসৃণ করে তোলে। যাদের ত্বকে বড় বড় লোমকূপ তাদের সেই জায়গায় সিলিকন বেসড প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে।

ম্যাট ফাউন্ডেশনের ব্যবহার

তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপের অন্যতম শর্ত ভালো মানের ম্যাট ফাউন্ডেশন বা পাউডার ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা। ত্বক থেকে হালকা তেল বা ঘাম হলেও তা ম্যাট ফাউন্ডেশন ম্যাট করে দিতে সাহায্য করবে। চেষ্টা করতে হবে খুব কম পরিমাণ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার। এতে মেকআপ কেকি হয়ে যাবে না এবং গলেও যাবে না৷

লুজ পাউডারের ব্যবহার

তৈলাক্ত ত্বকের মেকআপ সেটিংয়ের জন্য অবশ্যই লুজ পাউডার দিয়ে ফাউন্ডেশন ত্বকের ওপর বেকিং করে নিতে হবে। তবে অতিরিক্ত পাউডার দিয়ে বেকিং করা একটি ভুল ধারণা। পরিমাণমতো লুজ পাউডার দিয়ে মেকআপ বেক করে নিতে হবে। এরপর খুব হালকা করে প্রেসড পাউডার পুরো মুখে ব্যবহার করা যেতে পারে যদি দরকার হয়।

পাউডার ব্লাশ, হাইলাইটার, কন্ট্যুর ব্যবহার

তৈলাক্ত ত্বকে ক্রিম ব্লাশ, কন্ট্যুর বা হাইলাইটার ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকতে হবে। ব্লাশ, হাইলাইটার, কন্ট্যুর এগুলো সবক্ষেত্রেই পাউডার ফর্মুলার পণ্য ব্যবহার করতে হবে।

মেকআপ ফিক্সার ব্যবহার

মেকআপ করার পর অবশ্যই মেকআপ ফিক্সার ব্যবহার করতে হবে। এটি মেকআপের শেষ ধাপ। তৈলাক্ত ত্বকে ব্যবহার করতে হবে ম্যাটিফাইং ফিক্সার।

 

Comments