গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় প্রাধান্য পাবে আশ্রয়, ত্রাণ ও পুনর্নির্মাণ: হামাস

যুদ্ধবিরতি চলাকালীন উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামনে কাপড় শুকাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: এএফপি
যুদ্ধবিরতি চলাকালীন উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামনে কাপড় শুকাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: এএফপি

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে আলোচনা ও দরকষাকষি শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বরাত দিয়ে এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।

হামাস জানিয়েছে, আজই এই উদ্যোগ শুরু হলো। ইতোমধ্যে ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে, তারা এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ কাতারে মধ্যস্থতাকারীদের পাঠাবে।

হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানোউ এক বিবৃতিতে বলেন, '(যুদ্ধবিরতির) দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে যোগাযোগ ও আলোচনা শুরু হয়েছে। আমরা গাজাবাসীদের জন্য আশ্রয়, ত্রাণ ও গাজার পুনর্নির্মাণকে প্রাধান্য দিচ্ছি।'

তবে আলোচনায় হামাস বা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কারা যোগ দেবেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির চালুর পর দুই সপ্তাহের কিছু বেশি সময় পার হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার এক দিন আগে, ১৯ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হয়। ৪২ দিন ধরে চলবে এই বিরতি। এর মাঝেই দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হলো।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই যুদ্ধবিরতিকে ভঙ্গুর বলে অভিহিত করেন এবং এর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

অপরদিকে, আজ ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পাবে গাজার যুদ্ধবিরতি। বৈঠকের আগে হামাসের বিবৃতি ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদল পাঠানোর ঘোষণাকে ইতিবাচক লক্ষণ বলেই ভাবছেন বিশ্লেষকরা।

ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের অন্যান্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকের পর নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, 'ইসরায়েল একটি কার্যনির্বাহী প্রতিনিধি দলকে এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ দোহায় পাঠাবে। তারা (যুদ্ধবিরতি) চুক্তির বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখার কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।'

যুদ্ধবিরতি চলাকালীন উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামনে রুটি বানাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি। ছবি: এএফপি
যুদ্ধবিরতি চলাকালীন উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামনে রুটি বানাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি। ছবি: এএফপি

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এই হামলা প্রায় এক হাজার ২০০ ব্যক্তি নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন মানুষ। সেদিনই গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক, নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। শুরুতে বিমান হামলার পর স্থলবাহিনীও এতে যোগ দেয়। এই ১৫ মাসব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞে গাজার বেশিরভাগ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়। নিহত হন অন্তত ৪৭ হাজার ৫১৮ ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এই দীর্ঘ সময়ে ২০২৩ এর নভেম্বরে মাত্র ৭ দিনের যুদ্ধবিরতি চালু ছিল।

দীর্ঘ আলোচনার পর ১৯ জানুয়ারি থেকে হামাসের হাতে থাকা জিম্মি ও ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির শর্তে দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

প্রথম পর্যায়ে ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

RMG exports to US grow after a gap of two years

Garment shipment to the US increased by 0.75% to $7.34 billion

6h ago