যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও জিম্মি মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে ধর্মঘট

নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষভে তেল আবিবে জনসমুদ্র। ছবি: রয়টার্স
নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষভে তেল আবিবে জনসমুদ্র। ছবি: রয়টার্স

আজ ইসরায়েলে দেশব্যাপী ধর্মঘট পালিত হবে। গাজায় আটক জিম্মিদের দ্রুত মুক্ত করার জন্য ইসরায়েলি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য এই ধর্মঘট আহ্বান করেছে দেশের সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

গতকাল রোববার ইসরায়েল জুড়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে দেশটির জনগণ। লাখো জনগণ সড়কে নেমে এসে গাজা উপত্যকায় ছয় ইসরায়েলি জিম্মির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে।

শনিবার দেশটির সামরিক বাহিনী দক্ষিণ গাজার রাফা শহরের একটি ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি জানায়। এই তথ্য প্রকাশের পরই সড়কে নেমে আসে ইসরায়েলিরা।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, রোববারের বিক্ষোভে জেরুজালেম, তেল আবিব ও অন্যান্য শহরের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ অংশ নেয়।

বিক্ষোভকারী ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ,  সরকার 'জিম্মিদের জীবিত ফিরিয়ে আনার' জন্য যথেষ্ঠ উদ্যোগ নিচ্ছে না। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধে বিরতি দেওয়ার দাবি জানান, যাতে বাকি জিম্মিদের দ্রুত উদ্ধার করা যায়।

হিসতাদরুত ইউনিয়নের সভাপতি আরনন বার-ডেভিড বলেন, 'জিম্মিদের উপেক্ষা করা যাবে না। আমার ধারণা, আমরা যদি কোনো ব্যবস্থা না নেই, তাহলে তাদের (কর্তৃপক্ষের) ঘুম ভাঙবে না।'

'আগামীকাল (সোমবার) সকাল ছয়টা থেকে শুরু করে, ধর্মঘট শুরু হবে এবং ইসরায়েলের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে', যোগ করেন তিনি।

এই ধর্মঘট কবে শেষ হবে, সেটা নিয়ে কিছু জানাননি তিনি।

তেল আবিবে বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান নিক্ষেপ। ছবি: রয়টার্স
তেল আবিবে বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান নিক্ষেপ। ছবি: রয়টার্স

৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন ইসরায়েলি। তাদের মধ্যে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন, ৯৭ জন এখনো জিম্মি আছেন। বাকি ১২১ জন নভেম্বরের এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তি পান।

বিক্ষোভকারী ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা মনে করেন, আরেকটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিই জিম্মিদের জীবিত ফিরিয়ে আনার সেরা বিকল্প।

জিম্মি ইয়ারডেন বিবাসের চাচা ইয়াইর কেশেত রোববার তেল আবিবে বিক্ষোভ করার সময় এএফপিকে বলেন, 'আমরা সরকারকে বলছি, বাকি সব কিছু বাদ দিয়ে (যুদ্ধবিরতি) চুক্তি করুন।'

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের উদ্দেশে যুদ্ধকে দীর্ঘ করছেন—এমন অভিযোগ এনেছেন সমালোচকরা।

দ্য হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম নামের একটি সংগঠন জানিয়েছে, 'আমরা আর বিলম্ব, কারসাজি আর অজুহাত চাই না। যদি মাসের পর মাস যুদ্ধবিরতি আলোচনা না চলত, যদি এতদিন চুক্তি হয়ে যেত, তাহলে হয়তো এই ছয় জিম্মি আজও জীবিত থাকতেন।

ছয়টি প্রতীকী কফিনে ইসরায়েলি পতাকা জড়িয়ে মিছিল করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময়য় তাদের হাতে নিহতদের ছবি ছিল।

জল কামান উপেক্ষা করে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীদের এক অংশ। একটি অবরুদ্ধ মহাসড়কের সামনে গাড়ির চাকা পুড়িয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তেল আবিবে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হামলা। ছবি: রয়টার্স
তেল আবিবে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হামলা। ছবি: রয়টার্স

নিহত জিম্মিদের সবাইকে হামাস ৭ অক্টোবর আটক করে। তারা হলেন কারমেল গাত, ইডেন ইয়েরুশালমি, আলমগ সারুসি, ওরি দানিনো, ইসরায়েলি-মার্কিন নাগরিক হের্শ গোল্ডবার্গ-পোলিন ও রুশ-ইসরায়েলি আলেকজান্ডার লোবানভ।

ইসরায়েল দাবি করেছে, নিহতদের কাছে পৌঁছানোর অল্প সময় আগে হামাসের যোদ্ধারা তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

অপর দিকে, হামাসের কাতারভিত্তিক কর্মকর্তা ইজজাত আল-রিশক এই দাবি অস্বীকার করে জানান, জিম্মিরা 'জায়োনিস্টদের (ইসরায়েল) নির্বিচার বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।'

হামাসের দাবি অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।

Comments

The Daily Star  | English
child victims of July uprising Bangladesh

Child victims of July uprising: Of abandoned toys and unlived tomorrows

They were readers of fairy tales, keepers of marbles, chasers of kites across twilight skies. Some still asked to sleep in their mother’s arms. Others, on the cusp of adolescence, had just begun to dream in the language of futures -- of stethoscopes, classrooms, galaxies. They were children, dreamers of careers, cartoons, and cricket.

11h ago