‘ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মানুষের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি’

ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার খান ইউনিস এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করে আনা এক শিশুর মরদেহ। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ আটকা পড়েছেন এবং যাদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা এপির বরাত দিয়ে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজার সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যকেন্দ্র শিফা হাসপাতালের জেনারেল ডিরেক্টর মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া এপিকে বলেন, 'স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন যে, তারা অহরহ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়াদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছেন, তবে তাদের উদ্ধারে তারা কিছুই করতে পারছেন না।'   

গাজা শহরের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী আলি আহাদ বলেন, 'ইসরায়েলি বিমান হামলায় আমাদের পাশের একটি আবাসিক ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে উদ্ধারকারীরা এখন পর্যন্ত সেখানে তল্লাশি চালাতে আসেননি।'

আলি ও তার বন্ধুদের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করতে দেখা গেছে। সবাই একযোগে দ্রুত ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছিলেন এবং হতাহতদের কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে বের করে আনছিলেন। হঠাৎ একটি অ্যাম্বুলেন্সকে শিফা হাসপাতালের দিকে যেতে দেখে তারা সেটিকে থামানোর জন্য দৌড়ে গিয়ে এর জানালায় ধাক্কা দেন, যাতে আহত কয়েকজনকে সেটিতে তুলে দেওয়া যায়।

এপিকে আলি বলেন, 'আমরা খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ করছি, তবে এ ধরনের কাছে আমাদের অভিজ্ঞতা একেবারেই শূন্য।'

'আমাদের কাছে কোনো সরঞ্জাম নেই। আমাদের সেই সামর্থ্যও নেই', বলেন তিনি।

ইসরায়েলের মুহুর্মুহু বোমা হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের অন্তিম পরিস্থিতির করুণ বর্ণনা দিয়েছেন গাজার চিকিৎসক আহমাদ শাহীন।

বসনিয়ার সংবাদমাধ্যম ইস্ত্রাগাকে শাহীন বলেন, 'পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ চলছেই, থামার লক্ষণ নেই। তারা সবদিক (আকাশ, সমুদ্র ও স্থল) থেকে বোমাবর্ষণ করছে।'

'ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়াদের বাঁচানো যাচ্ছে না। আমরা তাদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু কিছুই করতে পারছি না', বলেন তিনি।

গাজার এই চিকিৎসক বলেন, 'হাসপাতালগুলো আহত মানুষ ও নিহতদের মরদেহ দিয়ে ভর্তি। রেফ্রিজারেটরেও মরদেহ রাখার জায়গা নেই। এখানকার আতঙ্ক বর্ণনা করার মতো নয়।'

'খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হলো- পান করার মতো পানিটুকুও নেই', বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

US welcomes Bangladesh election plan

The US yesterday welcomed plans by Bangladesh's interim leader to hold elections next year or in early 2026

59m ago