সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের যেসব এলাকায় ভারী বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাস হতে পারে

স্যাটেলাইট ইমেজ
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ। ছবি: ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর

আন্দামান সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আজ শনিবার সকালের দিকে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামীকাল নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে এবং এর পরদিন এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি)।

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৫ অক্টোবর সকালে বাংলাদেশের তিনকোণা দ্বীপ এবং সন্দ্বীপের ওপর দিয়ে মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করবে। এসময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১৭ কিলোমিটার। আজ সকালে বরিশাল থেকে নিম্নচাপটির অবস্থান ১ হাজার ১৩০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব সাগরে ছিল বলে জানায় ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তবে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনো কিছুই জানায়নি।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ আজ বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিম্নচাপটি বর্তমানে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৯০ দশমিক ৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। আন্দামান নিকোবর দ্বীপ থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে এবং চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।'

স্যাটেলাইট ছবি
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি। ছবিটি আজ দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে তোলা হয়েছে।

সবগুলো আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, 'সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র পুরো বরিশাল বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। স্থলভাগে আঘাত করার সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে ঢাকা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।'

'ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে প্রবেশের সম্ভাব্য সময় ২৪ অক্টোবর সকাল ৯টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত করার পর বাংলাদেশ অতিক্রম করতে ১৮ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাত অমাবস্যা হওয়ায় উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ থেকে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে', বলেন তিনি।

মোস্তফা কামাল আরও বলেন, 'সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোতে ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে (বিশেষ করে ফেনী, কুমিল্লা ও ব্রাক্ষমণবাড়িয়া) ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া, রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে ৩০ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Govt to scale back foreign loan reliance

The government plans to scale back its dependence on foreign loans as it seeks to mitigate threats to external debt sustainability.

12h ago