কর্মকর্তাদের বিশুদ্ধ বাতাসের প্রয়োজন নেই, তাদের সন্তানরাও বিদেশ থাকে: হাইকোর্ট

ঢাকার বাতাসের মান
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

বারবার নির্দেশনা সত্ত্বেও রাজধানী ও আশপাশের এলাকার বায়ুদূষণ ও ডেঙ্গু সংক্রমণ রোধে ব্যর্থতার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও ঢাকা সিটি করপোরেশনকে তিরস্কার করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, 'পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই অবৈধ ইটভাটা পরিচালনার অনুমতি দেয়। মালিকরা তাদের ম্যানেজ করে ফেলে। এ কারণেই বায়ুদূষণ হয়। কর্মকর্তাদের বিশুদ্ধ বাতাসের প্রয়োজন নেই। তাদের বেশিরভাগের সন্তানরাও বিদেশে থাকে, সেখানেই তারা বিশুদ্ধ বাতাস পায়।'

আদালত আরও বলেন, 'অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মারা গেলেও ঢাকা সিটি করপোরেশন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। তারা দৃশ্যত এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে না।' 

আজ সোমবার একটি রিট আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি খিজির হায়াত লিজুর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বক্তব্য দেন।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৯ সালে এ রিট আবেদন করেছিল। 

আজ শুনানি শেষে আদালত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়ার জন্য ১১ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

একই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট ফায়ার সার্ভিসকে গাবতলী-যাত্রাবাড়ী-টঙ্গীসহ রাজধানীর প্রবেশমুখে পানি ছিটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্ট সরকারকে রাজধানী ও এর আশেপাশে বায়ুদূষণ কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল।

আজ আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্ট বেঞ্চের সামনে 'সাভারে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনার সনদ বিক্রি' এবং 'বর্তমান বায়ুদূষণের মাত্রা' সম্পর্কিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চান।

বেঞ্চকে তিনি বলেন, ঢাকাবাসী গত আট বছরে মাত্র ৪৭ দিন বিশুদ্ধ বাতাস পেয়েছে। কিন্তু, আদালতের বারবার নির্দেশনা সত্ত্বেও ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবী মো. বিল্লাল হোসেন লিজন আদালতকে বলেন, তাদের মক্কেলরা আদালতের নির্দেশনা মেনে ব্যবস্থা নিয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে শফিউজ্জামান।

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher USD rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

27m ago