ব্রহ্মপুত্রের বুকে চকোয়া পাখির অভয়ারণ্য
ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চকোয়া পাখির মেলা বসেছে। সেখানে গেলেই দেখা মিলবে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ানো চকোয়া পাখির। এই দৃশ্যে মুগ্ধ হচ্ছেন নৌকায় নদী পার হওয়া যাত্রীরাও।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের অবস্থান। নদের যাত্রাপুর ঘাটের নৌকা মাঝি আশরাফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্ষাকালে ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চকোয়া পাখি দেখা যায় না। তবে, শীতের শুরুতে তারা চলে আসে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকা থেকে পাখিগুলো এখানে এসে অভয়ারণ্য তৈরি করেছে।'
নৌকার যাত্রী মেহেরুল ইসলাম বলেন, 'আমি প্রতিদিন চরনারায়ণপুর থেকে যাত্রাপুর নৌকায় যাতায়াত করি। নৌকায় প্রায় ৫০ মিনিটের যাত্রায় ব্রহ্মপুত্রের ৭-৮টি স্থানে চকোয়া পাখি দেখতে পাই। এসব পাখি খাবারের সন্ধান করে। নৌকা দেখে তারা দল বেঁধে উড়ে যায়। উড়ে যাওয়ার দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে।'
চরপার্বতীর কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'শীতকালে ব্রহ্মপুত্রে শোভা হলো চকোয়া পাখি। এসব পাখি দিনভর খাবার সংগ্রহ করে বিকেলে নীড়ে ফিরে যায়। শীতকালে চরাঞ্চলের বিভিন্ন গাছে চকোয়া পাখিরা থাকে। তবে, বর্ষা শুরু হলেই আবার নিজস্ব ঠিকানায় ফিরে যায়।'
কলেজ শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হক বলেন, 'কয়েকবছর আগে কিছু শিকারি চরে এসে চকোয়া পাখি শিকার করতেন। চরের মানুষের বাঁধার কারণে তারা এখন পাখি শিকার করতে আসতে পারেন না। চরের কোনো মানুষ চকোয়া পাখি শিকার করেন না।'
তিনি আরও বলেন, 'চকোয়া পাখি আমাদের চর এলাকার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।'
স্থানীয়ভাবে এই হাঁসকে চকোয়া বা লাল ঝুঁটি ভুতিহাঁস বলে ডাকলেও এর নাম রাঙ্গামুড়ি বা রেড ক্রেস্টেড পোচার্ড (Red Crested Pochard)। এই পরিযায়ী পাখি সাধারণত শীতের শুরুতে খাবারের খোঁজে বাংলাদেশে আসে। কিন্তু এ দেশে তারা প্রজনন করে না।
শীত শেষে আবার তারা ফিরে যায় এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে।
Comments