‘বিলুপ্ত’ বিষধর রাসেলস ভাইপারের আনাগোনা বাড়ল কেন?

রাসেলস ভাইপার স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া ও উলুবোড়া নামেও পরিচিতি। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পড়ে আছে পাকা ধান, ভুট্টা। কিন্তু খেত থেকে ফসল তুলতে ভয় পাচ্ছেন কৃষক। এই ভয়ের কারণ এলাকায় তীব্র বিষধর রাসেলস ভাইপারের আনাগোনা বেড়ে যাওয়া; যে সাপের কামড়ে গত দেড় মাসের মধ্যে এখানকার অন্তত তিনজন কৃষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ৭ মে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পদ্মার তীরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিনুর রহমানকে দংশন করে রাসেলস ভাইপার। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

এ ঘটনার আগের দিনই একই জেলার গোদাগাড়ীতে মাঠে ধান কাটতে গিয়ে রাসেলস ভাইপারের কামড় খান কৃষিশ্রমিক সামায়ন কবির। শাকিনুরের মতো তিনিও চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কেবল রাজশাহী অঞ্চলেই রাসেলস ভাইপারের দংশনে ২০২ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৬২ জন।

আর চলতি বছরে এখন পর্যন্ত পদ্মা তীরবর্তী রাজশাহী, রাজবাড়ী ও ঢাকার কাছের জেলা মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় রাসেলস ভাইপারের কামড়ে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

রাসেলস ভাইপার স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া ও উলুবোড়া নামেও পরিচিতি। সাপটি দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মতো। ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতে কাজ করতে এসেছিলেন স্কটিস সার্জন প্যাট্রিক রাসেল। ১৭৯৬ সালে তিনি এই সাপ সম্পর্কে গবেষণা করেন। তার নাম অনুসারে এই সাপের নামকরণ করা হয়।

বাংলাদেশে ২০০২ সালে প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন ঘোষিত 'বিলুপ্ত' এই সাপটি মূলত শুষ্ক অঞ্চলের, বিশেষ করে বরেন্দ্র এলাকার বাসিন্দা হলেও এখন তা দেশের অন্তত ২৫টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পৌঁছে গেছে উপকূলীয় অঞ্চল বরিশাল, পটুয়াখালী ও চাঁদপুর পর্যন্ত। আর প্রায়ই এসব এলাকা থেকে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর খবর আসছে, যাদের বেশিরভাগ দরিদ্র কৃষক ও কৃষিশ্রমিক।

প্রশ্ন হলো—বিলুপ্ত ঘোষিত এই সাপটির আনাগোনা এত বাড়ল কেন? আবার একটা নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে এটি আরও অনেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার কারণগুলোও বা কী কী?

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক মো. ফরিদ আহসানের সঙ্গে। তার ভাষ্য, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প সংখ্যক রাসেলস ভাইপার সবসময়ই ছিল। কিন্তু বংশবিস্তারের মতো পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকায় এই সাপের উপস্থিতি তেমন একটা বোঝা যায়নি।

বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপারের পুনরাবির্ভাব ও এই সাপ থেকে মানুষের ঝুঁকির বিষয়ে গবেষণা করেছেন চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগর সাবেক এই অধ্যাপক। ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ২০টি রাসেলস ভাইপার দংশনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে করা ওই গবেষণাটি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়।

তখন ওই গবেষণায় বলা হয়, দেশের উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১৭টি জেলায় রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি আছে।

অধ্যাপক ফরিদ আহসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাপটি যে একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, বিষয়টা এরকম না। বলা যায় যে রেকর্ড ছিল না। কিন্তু বাস্তবে আসলে ছিল। যেহেতু ওই পর্যায়ে গবেষণা হয়নি, তাই বিষয়টা তখন বোঝা যায়নি। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে আবার এর অস্তিত্ব টের পাওয়া গেল।

'এখন যে সাপের সংখ্যা বেড়ে গেল এর কয়েকটি কারণের মধ্যে একটি হলো, এই সাপটি বাচ্চা দেয়। ডিম পাড়ে না। তাই এদের বেঁচে থাকার হারটা বেশি। ডিমে বেঁচে থাকার হারটা একটু কম হয়। বরেন্দ্র অঞ্চলে এই সাপ আগে থেকেই ছিল। ওই অঞ্চলে আগে বছরে একটা ফসল হতো। এখন দুটো-তিনটা ফসল হয়। বেশি ফসল হওয়ার কারণে দেখা যায় সেখানে ইঁদুর বেশি থাকে। আর এই ইঁদুর হলো রাসেলস ভাইপারের প্রধান খাদ্য।'

আবার বর্ষার ঢলে উজান থেকে আসা পানিতে কচুরিপানার ওপর ভেসে কিছু সাপ বাংলাদেশে আসছে বলেও জানান এই গবেষক। বলেন, 'চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দিকে পদ্মা যেখানে বাংলাদেশে ঢুকেছে, ওইদিককার ঝোপঝাড়গুলো কিছু জায়গায় কেটে ফেলা হয়েছে। যে কারণে পদ্মার অববাহিকা ধরে নামতে নামতে শরীয়তপুর পর্যন্ত চলে গেছে এই রাসেলস ভাইপার। এরা মূলত বাচ্চা কিংবা বড় অবস্থায় কচুরিপানায় করে আসে। এসে চরে কিংবা ডাঙায় ভিড়ে যায়।'

এভাবে এখন দেশের অন্তত ২৫টি জেলায় এই সাপটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন ফরিদ আহসান।

অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়া এবং মাটির উপরিভাগের পরিবর্তনের বিষয়টিও রাসেলস ভাইপার ছড়িয়ে পড়ার আরেকটি কারণ বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও টক্সিকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি এম এ ফয়েজ। সম্প্রতি প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্রের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, 'এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের দিনগুলোতে বাংলাদেশের যেসব এলাকায় সাপ নেই, সেসব এলাকাতেও রাসেলস ভাইপারসহ অন্যান্য সাপ দেখা যেতে পারে।'

রাসেলস ভাইপার কেন ভয়ংকর?

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ফরিদ আহসান ও এম এ ফয়েজ দুজনই বলছেন, রাসেলস ভাইপার এমন একটি সাপ যেটি সর্বোচ্চ পরিমাণ বিষ ঢালতে পারে মানুষের শরীরে। এর দাঁতের আকার বড় ও বিষের পরিমাণ বেশি।

এম এ ফয়েজ বলেন, 'রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আহত রোগীর চিকিৎসার বিষয়টাও জটিল। এ জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও সহকারীর দরকার হয়। রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়ে উঠলে আইসিইউয়ের দরকার হয়।'

তারা জানান, বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিষধর বলে ধরা হয় এই রাসেলস ভাইপারকে। এই সাপের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে আসা, পক্ষাঘাত এবং কিডনি ও ফুসফুসের ক্ষতিসহ বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ দিতে পারে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে মৃত্যু হয়।

এই প্রজাতির সাপের কামড়ের কিছুক্ষণ পরই দংশিত স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যথার পাশাপাশি জায়গাটি দ্রুত ফুলে যায় এবং ঘণ্টাখানেকের মধ্যে কাছাকাছি আরও কয়েকটি অংশ আলাদাভাবে ফুলে যায়। অন্যান্য সাপে কাটা রোগীর তুলনায় রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর হারও বেশি।

ভারতে অ্যান্টিভেনম তৈরির জন্য রাসেলস ভাইপারের বিষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: এএফপি

রাসেলস ভাইপারের জন্য বিশেষায়িত অ্যান্টিভেনম বাংলাদেশে নেই

অ্যান্টিভেনম সেটাই, যা বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর কিংবা বিষ নিষ্ক্রিয় করতে পারে এমন উপাদান। এই অ্যান্টিভেনম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায় এসেনশিয়াল ড্রাগ বা অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকাভুক্ত হলেও বাংলাদেশে তা উৎপাদন হয় না। অথচ বাংলাদেশে প্রতি বছর পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে সাপে কামড়ায়। এর ভেতর ছয় হাজারের বেশি মানুষ মারা যান।

সাপ কামড় দেওয়ার পর দ্রুত অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দেওয়া হলে অ্যান্টিভেনমের অ্যান্টিবডিগুলো বিষকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বেঁচে যায়।

সাপ কামড়ানোর পর একজন রোগীকে ১০টি করে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন নিতে হয়। এর ১০টি ভায়াল মিলে হয় একটি ডোজ। বিষের মাত্রা বেশি হলে রোগীকে একাধিক ডোজ অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করার দরকারও হতে পারে।

এম এ ফয়েজ বলছেন, অ্যান্টিভেনম মূলত দুই ধরনের। একটি হলো মনোভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম; যা মূলত একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর। অন্যটি পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম। এটি একাধিক প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর।

টক্সিকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি ফয়েজ বলছেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে যে অ্যান্টিভেনম আনা হয়, সেটি মূলত চারটি সাপের বিষের মিশ্রণে তৈরি। এটি কিছু সাপের দংশন নিরাময়ে কাজ করে। অন্যক্ষেত্রে আংশিক কাজ করে। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে কোনো অ্যান্টিভেনম তৈরি হয় না।

কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে, সাপের কামড়ের রোগীর চিকিৎসার জন্য স্থানীয় সাপ থেকে অ্যান্টিভেনম তৈরি হলে তা সবচেয়ে কার্যকর হয়। একেক দেশের সাপের প্রকৃতি একেক রকম হওয়ায় অন্য দেশের অ্যান্টিভেনম এই দেশে শতভাগ কার্যকর নাও হতে পারে।

অধ্যাপক ফরিদ আহসানও বলছেন, 'রাসেলস ভাইপারের বিষ থেকে অ্যান্টিভেনম তৈরি করে তা এই সাপে কামড়ানো রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যেত।'

অবশ্য চট্টগ্রামে ভেনম রিসার্চ সেন্টার রাসেলস ভাইপার অর্থাৎ চন্দ্রবোড়ার বিশেষায়িত অ্যান্টিভেনম তৈরির কাজ করছে জানিয়ে এই গবেষক বলেন, 'এখনো টেস্টিং চলছে। মুরগি, ছাগলের শরীরে প্রয়োগ করে অ্যান্টিবডি কেমন তৈরি হচ্ছে দেখা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হলো এর বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য তো কোনো প্ল্যান্ট নেই। গোপালগঞ্জে সরকারি ফার্মাসিউটিক্যালসে একটা প্ল্যান্ট করার চেষ্টা চলছে। কারণ বেসরকারি কোনো ফার্মাসিউটিক্যালস এটি করতে চাইবে না। কারণ যেহেতু এর চাহিদা কম। তাই তাদের ব্যবসা হবে না।'

রাসেলস ভাইপারের কামড় থেকে বাঁচতে ও কামড়ালে করণীয়

গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে প্রতি বছর যে পরিমাণ সর্প দংশনের ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে অন্তত ৪৩ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় প্রতি বছর মোট সর্প দংশনের ঘটনার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ রাসেলস ভাইপারের কারণে হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখনো এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই।

সাধারণত কৃষি জমিতে থাকে বলে মানুষ অনেক সময়ই সাপের গায়ে পা দেয় বা না জেনে একে বিরক্ত করে। তখন রাসেলস ভাইপার বিপন্ন বোধ করলে আচমকা আক্রমণ করে বসে। এ জন্য ধানখেত বা গমখেতে কাজে নামার আগে লম্বা বাঁশ দিয়ে জায়গাটি নাড়িয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক ফরিদ আহসান। বলেন, 'তাতে সাপ হয়তো গর্তে চলে যাবে। পারলে গামবুট পরে, জিনসের ট্রাউজার পরে কাজে নামতে হবে।'

প্রাণিবিদ্যার সাবেক এই অধ্যাপক আরও বলেন, 'কামড়ে যদি দাঁত বসে যায়, তাহলে ক্ষতস্থানের ওই জায়গাটিসহ ‍ওপর-নিচের খানিকটা জায়গা নিয়ে হালকা করে ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হবে। নড়াচড়া করা যাবে না। রোগীকে সাহস দিতে হবে। হাঁটা-চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দিতে হবে। যাতে রক্ত চলাচলটা একটু কম হয়। এভাবে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

'গ্রামাঞ্চলের কোথাও যদি গাড়ি না পাওয়া যায়, তাহলে মোটরসাইকেলে রোগীকে চালক ও আরেক আরোহীর মাঝে বসিয়ে নিতে হবে। তাহলে একটু দ্রুত হবে।'

ফরিদ আহসানের পর্যবেক্ষণ হলো, 'বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া হয় না। অনেকটা দেরি হয়ে যায়। তখন এটা একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এই সাপের বিষ এমনই বেশি যে একসঙ্গে শরীরের অনেকগুলো অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে যায়।'

এর বাইরে রাসেলস ভাইপারের কামড় থেকে বাঁচতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যেসব এলাকায় এই সাপের দেখা মিলছে, সেই জায়গাগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দেন ফরিদ আহসান। জোর দেন দেশেই মনোভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম তৈরির ওপর। বলেন, 'কেউ হাতির আক্রমণে মারা গেলে সেটা যদি প্রমাণ হয় তাহলে সরকারের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তাহলে সাপের কামড়ে মারা গেলে কেন দেবে না? সাপতো আমরা মারতে পারি না। গবেষণার জন্যও সাপ ধরতে গেলে অনুমতি নিতে হয়। আবার আক্রান্ত হলে মানুষ এই সাপ মারছেও প্রচুর।'

উল্লেখ্য, একটি স্ত্রী রাসেলস ভাইপার একবারে ৭০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়, যার বেশিরভাগই বেঁচে থাকে। সাপটি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার এটিও একটি কারণ।

আবার কোনো কারণে যদি প্রাকৃতিক শিকারি, যেমন বেজির সংখ্যা কমে যায় তাহলে রাসেলস ভাইপারের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু এই সাপ মূলত ইঁদুর এবং ইঁদুর গোত্রের প্রাণী খেয়ে থাকে, তাই ইঁদুরের সংখ্যা বাড়লেও রাসেলস ভাইপারসের সংখ্যাও বাড়ে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

7h ago