কয়লা সংকট: কয়েক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হতে পারে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র

Payra Coal
ছবি: সংগৃহীত

কয়লা সংকটের কারণে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত ২৫ মে এই উৎপাদন বন্ধ করা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর ৩ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এ ধরণের পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।

কয়লার যোগান না হলে এই সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্য ইউনিটটি থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সমগ্র বরিশাল ও খুলনা এবং ঢাকার কিছু অংশের জন্য বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য উৎস।

দেশের সর্ববৃহৎ কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূত্র বলছে, তাদের কাছে মাত্র ৫০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে এবং দুটি ইউনিটের প্রতিটিতে দৈনিক প্রায় ৬ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন। সে হিসাবে ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ হতে আর দেরি নেই।

বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা করে এবং ৫০ শতাংশ শেয়ার থাকা চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি) কয়লার টাকা দেয়। বিল পরিশোধ করে দেওয়ার ৬ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছ থেকে অর্থ আদায় করে সিএমসি।

গত ২৭ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পিডিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে বিসিপিসিএল জানায়, ৬ মাসের বেশি বকেয়া থাকায় সিএমসি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, 'বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকবে।'

বিপিডিবি এখনো পাওনা পরিশোধ করতে পারেনি।

বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রায় ৩০ কোটি ডলার বকেয়া ছিল এবং কয়লা পরিশোধের বিষয়ে পিডিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা ৫ কোটি ৮ লাখ ডলার পেয়েছি এবং এই মাসের মধ্যে আরও ১০ কোটি ডলার পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছি।'

এই আশ্বাসের ভিত্তিতে সিএমসি কয়লা সরবরাহের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে--- এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমরা এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার চেষ্টা করছি। তবে সেটা যদি কালও খুলি, তবুও কয়লার চালান আসতে অন্তত ২৫ দিন সময় লাগবে। তার মানে পুরো বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৩ তারিখের (জুন) পর থেকে কয়েক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখতে হবে।'

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ৬৬০ মেগাওয়াটের নিচে নেমে যায়। গতকাল সরবরাহ ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ মেগাওয়াটের মধ্যে।

বর্তমানে দেশে ১৩ হাজার থেকে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা ৩ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াটের বিপরীতে গড়ে ২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করছে।

পিডিবির মুখপাত্র শামীম হাসান অবশ্য আশা প্রকাশ করে বলেছেন, পায়রা বন্ধ হওয়ার আগেই কয়লা সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

'তাদের মজুত কয়লা দিয়ে যতদিন সম্ভব বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখতে বলা হয়েছে। তারপরও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে বিকল্প উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরবরাহ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হবে,' তিনি যোগ করেন।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

3h ago