বন্যায় চট্টগ্রামে সুপেয় পানির সংকট, পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি

বন্যায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বহু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তলিয়ে গেছে সুপেয় পানির উৎস। ছবি: স্টার

বন্যায় নলকূপ ও সুপেয় পানির অন্যান্য উৎস তলিয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানসহ অন্যান্য উপজেলার বাসিন্দারা বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক এলাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা বন্যা-কবলিতদের মধ্যে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট (ডব্লিউপিটি) ও ওরাল স্যালাইন (ওআরএস) সরবরাহ করলেও চাহিদা বেশি থাকায় তা দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়নের প্রায় সব নলকূপ এবং অধিকাংশ পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হালিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ত্রাণ দলের কাছ থেকে ওরাল স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট পেয়েছি, কিন্তু চাহিদা বেশি থাকায় আগামী দিনে সেগুলো সময়মত পাব কিনা সে ব্যাপারে দুশ্চিন্তা কাজ করছে।'

ছবি: স্টার

তবে জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের কাছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ওরাল স্যালাইনের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং এ বিষয়ে জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার ১৫টি উপজেলার মধ্যে তিন-চারটি উপজেলা বন্যায় আক্রান্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের কাছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং ওরাল স্যালাইনের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং আমরা ইতোমধ্যেই সেগুলো উপদ্রুত এলাকায় পাঠিয়েছি এবং আরও বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।'

বর্তমানে জেলায় এক লাখ ১১ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও  তিন লাখ ৪৮ হাজার প্যাকেট ওরাল স্যালাইন মজুদ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিভিল সার্জন আরও বলেন, 'জেলায় বন্যাদুর্গতদের সেবা দিতে ২৯০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এসব মেডিকেল টিম বন্যা পরবর্তী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।'

ছবি: স্টার

বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্যা-কবলিতদের ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ও জন্ডিসসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যা-কবলিত এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন। পানিবন্দি থাকা অনেক মানুষ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া, নবজাতক, শিশু এবং বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তাই যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে তাদের অবিলম্বে চিকিৎসা দিতে হবে।'

অবিলম্বে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে ডায়রিয়া, আমাশয় ও জন্ডিসসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ বন্যা-কবলিত এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রান্না, পান করা এবং হাত-মুখ ধোয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Trump brokered ceasefire agreement in contact with Israel, Iran: White House official

Meanwhile, fresh series of explosions were reported in the Iranian capital Tehran, as per AFP journalist

1d ago