সিলেটে বন্যায় আরও ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি

পানিবন্দি মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সিলেটে রোববার ও গত মধ্যরাতে ভারী বর্ষণে নতুন করে শতাধিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে এবং নতুন করে আরও এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। সিলেট নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টিই এখন পানিতে তলিয়ে আছে।

গতকাল বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, সিলেট সিটি কপোরেশনসহ ১৪টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার ৭৬১টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৬ লাখ ১৪ হাজার ২৮২ জনের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য উপজেলায় ৫৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। 

একইদিন রাত ১০টায় দেওয়া তথ্যমতে, সিলেট সিটি কপোরেশনসহ ১৪টি উপজেলার ৮৩২টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৮১২ জনের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। প্রতিটি উপজেলার দুর্গত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে শুকনা খাবার ও চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটে আজ ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আজ মোট ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং গতকালও একই পরিমাপের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।'

সিলেটের উপশহর এলাকার বাসিন্দা সাজিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের এলাকার প্রতিটি পাড়ায় হাঁটুসমান, আবার কিছু কিছু এলাকায় কোমরসমান পানি। গতকাল থেকে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। আমার নিজের বাড়িতেই অনেক পানি। মেঝেতে যেসব জিনিসপত্র ছিল সব ভেসে চলে গেছে। আর সুরমা নদীর ময়লা ঘরে প্রবেশ করছে।'

পানি বাড়ার কারণে প্রতিবেশীরা নিরাপদের থাকার জন্য বাড়ি ছাড়ছেন বলেও জানান তিনি।

বাসিন্দারা জানান, অনেক বাড়িতেই পানি উঠেছে। কোনো বাড়িতেই বিদ্যুৎ, গ্যাস ও খাবার নেই।

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নগরীর ছড়া-খাল পানিতে ভরে গেছে, এতে নিম্নাঞ্চলের ওয়ার্ডগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে সব ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিসিক।'

১৫ নম্বর ওয়ার্ডে কিশোরী মোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়, বসন্ত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ও স্থানীয় কাউন্সিলর মওদুদ আহমদের বাসায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে মির্জা জাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে তেররতন স্কুল, ওমর শাহ স্কুল এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসেফ ঘাসিটুলা স্কুল, জালালাবাদ মডেল স্কুল, মঈনুদ্দিন মহিলা কলেজ ও কানিশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন কাউন্সিলর তাদের নিজ বাসভবনে পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয় প্রদান করছেন। 

 

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

2h ago