এখনো জলাবদ্ধ খুলনা নগরীর নিচু এলাকা, পাইকগাছায় ভেসে গেছে ১১২ ঘের

কয়রায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা
ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন খুলনা মহানগরের নিচু এলাকার বাসিন্দারা।

খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ হাজার ২১৫টি সড়ক আছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এই বর্ষাতেও এসব সড়কের দুই-তৃতীয়াংশ ডুবে গিয়েছিল।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যৈষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

খুলনার দৌলতপুরের সবুজ সংঘ মাঠ এলাকার বাসিন্দা ডলি কুণ্ডু বলেন, অনেক জায়গায় পানি সরে গেলেও আমাদের রাস্তা এখনো ডুবে আছে। আমার বাড়ির সামনের ১৯ ফুট রাস্তা আছে। ড্রেন শুধু সড়কের এক পাশে, সেটির প্রস্থ মাত্র ১ ফুট। এ কারণে পানি ঠিক মতো সরছে না।

নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার এবং প্রস্থ বাড়িয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

নগরীর খালিশপুরের নতুন রাস্তার বাসিন্দা রাহুল শেখ। তিনি বলেন, নগরীর অধিকাংশ সংযোগ সড়কে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকে। খালিশপুর হাউজিং পুরাতন ও নতুন কলোনির অপরিকল্পিত রাস্তা ও ড্রেনগুলো বছরের পর বছর সংস্কার ও পরিষ্কার না করায় বৃষ্টি হলেই ড্রেন উপচে পানি ঘরে চলে আসে।

খালিশপুরের বিআইডিসি রোড দীর্ঘ ২ বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী। সেখানে ওয়াসা, বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি করপোরেশন কাজ করছে কিন্তু ২ বছরেও কাজ শেষ হয়নি। ফলে আমাদের দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না, বলেন তিনি।

খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে 'খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন' নামে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয় ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। প্রকল্প ব্যয় ছিল ৮২৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের অক্টোবরে। বর্তমানে ২৫টির বেশি ড্রেনের কাজ চলতেছে।

পাইকগাছা উপজেলার সিনিয়র মৎস কর্মকর্তার কার্যালয় জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাতে উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ১১২টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। সোলাদানা ইউনিয়নের ২৪৫ বিঘা আয়তনের ৩৫টি ঘের ভেসে গেছে। দেলুটি ইউনিয়নের ২২০ আয়তনের ২২টি, লতা ইউনিয়নের ২০০ আয়তনের ৪০টি ও পড়ইখালি ইউনিয়নের ৯০ আয়তনের ১৫টি ঘের ভেসে গেছে।

ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

সিত্রাংয়ের প্রভাবে কয়রা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল থেকে সদর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের শতাধিক মানুষ বাঁধ মেরামত কাজে অংশ নেন।

কয়রা সদর ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের বাসিন্দা আখতারুল শেখ বলেন, বেড়িবাঁধের বেশ খানিকটা অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যদি এখনই ঠিক করা না হয় তাহলে জোয়ারের পানি ঢুকে যাবে। তাই আমরা সবাই কাজ করছি।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়নের (বোর্ড বিভাগ-২) উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ আমরা ৫০ মিটার এলাকায় মাটি ফেলে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করছি। পরবর্তীতে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর ব্যবস্থা করা হবে। পানি আটকানোর পরে মূল ক্লোজারে কাজ করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়রার হ‌রিণ‌খোলা ও গা‌তির‌ঘেরী‌র বাঁধে ভাঙন দেখা দি‌য়ে‌ছে। গতকাল স্থানীয়‌ বাসিন্দাদের নি‌য়ে মেরাম‌তের কাজ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আজ হরিণখোলা এলাকায় কাজ করছেন।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago