শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙনে বিলীন প্রায় ১ কিমি এলাকা, হুমকিতে বাঁধ

যমুনায় ভাঙন
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মাজ্জান গ্রামে যমুনার ভাঙন। ১০ আগস্ট ২০২২। ছবি: স্টার

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মাজ্জান ও বিনোটিয়া গ্রামে যমুনার ভাঙনে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে নদীপারের শতাধিক পরিবারের মানুষ।

ভাঙনে সব হারিয়ে তারা এখন নদী-তীরবর্তী বাঁধের ওপর মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

কৈজুরী-বিনোটিয়া গ্রামে যমুনার তীর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন অংশে দফায় দফায় ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধ। নদী ভাঙতে ভাঙতে বাঁধের ১৫ থেকে ২০ মিটার কাছে এসে পৌঁছেছে।

ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে আরও কয়েক শ ঘর-বাড়ি, স্কুল, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

যমুনায় ভাঙন
ছবি: স্টার

দ্য ডেইলি স্টারকে তারা জানান, গত জুনে বন্যার শুরু থেকেই শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে যমুনার ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করে। পানি কমার পর নতুন করে পানি বাড়তে থাকায় জুলাইয়ের প্রথমে আবারও শুরু হয় ভাঙন। সে সময় মাজ্জান ও বিনোটিয়া গ্রামে ভাঙন তীব্র হয়।

মাজ্জান গ্রামের রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আকস্মিক ভাঙনে আমার ও আত্মীয়দের ১২ ঘর একদিনে নদীতে চলে গেছে।'

তিনি জানান, এ গ্রামের শতাধিক বাড়ি ইতোমধ্যে যমুনার গর্ভে চলে গেছে। শুধু বাড়ি-ঘর নয়, ভাঙনে তার প্রায় ১০ বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। গৃহহীন, কর্মহীন হয়ে রফিকুল এখন বাঁধের ওপর মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

একই গ্রামের রোজিনা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যমুনায় ঘর-বাড়ি হারিয়ে বাঁধের ওপর মানবেতর জীবনযাপন করছি। নতুন করে ঘর করার সামর্থ্য নেই। পুনর্বাসনের জন্য সরকারি সাহায্য দরকার।'

তাদের মতো একই অবস্থা শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের মাজ্জান ও বিনোটিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন, মধুমালা, দুলু খাতুন, স্বরবানু, রূপচাঁদ মোল্লা ও এরশাদ মোল্লাসহ আরও অনেকের। ক্ষতিগ্রস্তরা ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

যমুনায় ভাঙন
ছবি: স্টার

শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বালু ব্যবসায়ীরা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। আর মাত্র ২০ মিটার ভাঙলেই নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশংকা আছে।

ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য এখনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ চলছে। ভাঙনের তীব্রতা কমেছে।'

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেভাবে বালির বস্তা ফেলার কথা সেভাবে ফেলা হচ্ছে না।'

গাফিলতির কথা অস্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন দাবি করেন, 'নিয়ম মাফিক কাজ হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

5h ago