৮০৩ দিন পর দেশের মাটিতে নায়ক ফারুক
কিংবদন্তি নায়ক ফারুক দেশের মাটিতে ফিরলেন ঠিক ৮০৩ দিন পর। তার কারণ ২০২১ সালের ৪ মার্চ অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তারপর আর দেশে ফেরা হয়নি তার। কিন্তু দেশের জন্য অপার ভালোবাসা বুকের গভীরে পুষে রেখেছিলেন। দেশের মাটি, মানুষের প্রতি তার ছিল অন্তহীন ভালোবাসা। সিনেমায় জন্য ছিলেন সাহসী কণ্ঠস্বর। গ্রাম বাংলায় চিরসবুজ নায়ক। চলচ্চিত্র জগতে 'মিয়া ভাই' হিসেবে খ্যাত হয়ে উঠেছিলেন।
নায়ক ফারুক বলতেই তার অভিনীত সিনেমার কালজয়ী গান—'সব সখীরে পার করিতে নেবো আনা আনা', 'ওরে নীল দরিয়া', 'তুমি আমার মনের মাঝি', 'একটাই কথা আছে বাংলাতে', 'চুল ধইরো না খোঁপা খুলে যাবে হে নাগর', 'আমি সাহেব নামের এক গোলাম' মনের মধ্যে গুনগুন করে ওঠে।
কিংবদন্তি নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নায়ক ফারুকের মরদেহ আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশে আসে। বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও সেন্সর বোর্ডের সদস্য অরুণা বিশ্বাস।
তিনি জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নেওয়া হয় নায়ক ফারুকের উত্তরার বাসায়। সেখান থেকে সকাল ১১টায় নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় মরদেহ নেওয়া হবে নায়কের চিরচেনা বিএফডিসিতে।
বাদ জোহর বিএফডিসিতে জানাজার পর মরদেহ নেওয়া হবে চ্যানেল আই ভবনে। তারপর গুলশান আজাদ মসজিদে। সেখানে বাদ আসর আরেকটি জানাজা শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে নিজ জন্মস্থান গাজীপুরের কালীগঞ্জে। সেখানেই সমাহিত হবেন এই কিংবদন্তি।
নায়ক ফারুকের বড়পর্দায় অভিষেক হয় এইচ আকবর পরিচালিত 'জলছবি' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়।
ফারুক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে—'সারেং বৌ', 'লাঠিয়াল', 'সুজন সখী', 'নয়নমণি', 'মিয়া ভাই', 'গোলাপী এখন ট্রেনে', 'সাহেব', 'আবার তোরা মানুষ হ', 'আলোর মিছিল', 'দিন যায় কথা থাকে', 'সখী তুমি কার', 'কথা দিলাম' ও 'সূর্য গ্রহণ' ইত্যাদি।
Comments