কে-পপ তারকা হতে আগ্রহীদের বিশেষ ভিসা দেবে দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়া বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার উদ্যোগ হিসেবে কে-পপ তারকা হতে আগ্রহী বিদেশিদের জন্য একটি বিশেষ ভিসা চালু করতে যাচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় গত সোমবার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়া হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কোরিয়া হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে 'কে-কালচার ট্রেনিং ভিসা' চালু করবে। এতে কে-পপ কোম্পানিগুলোতে প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছুক বিদেশি নাগরিকদের সুবিধা হবে।
নতুন এই স্কিমের আওতায় বিদেশি নাগরিক, যারা কে-পপ নাচ, কোরিওগ্রাফি এবং মডেলিং শিখছেন তারা ভিসার জন্য নির্বাচিত হবেন। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এই ভিসার বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
এছাড়া দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় আরও দর্শনার্থীদের টানতে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন প্রবেশ প্রক্রিয়া সহজ করা এবং গণপরিবহন ব্যবহারে উত্সাহ দেওয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও করোনা মহামারির পরে দেশটির পর্যটন রাজস্ব পুনরুদ্ধারে ধীর গতিতে চলছে। সেই উদ্বেগের জায়গা থেকে এই উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কোরিয়ায় থাকাকালীন যেসব বিদেশি নাগরিক দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য অঞ্চলভিত্তিক 'রিজিওন-স্পেসিফিক ডিডজটাল নোম্যাড ভিসা' চালু করবে দেশটি। এতে আঞ্চলিক সরকারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়বে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ভিসা প্রক্রিয়ার সময় কমাতে কর্মীর সংখ্যা বাড়াবে এবং ভিসা আবেদন কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াবে। ফলে বিদেশি পর্যটকরা সহজে কোরিয়া ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশনে (কে-ইটিএ) আবেদনের করতে পারবেন।
পাশাপাশি সরকার দেশটির এয়ারপোর্টগুলোর সঙ্গে বিদেশি শহরের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। কয়েকটি দেশের সঙ্গে নতুন রুট চালুর কথাও ভাবছে দেশটির সরকার।
কোরিয়ায় গণপরিবহন ব্যবহার করে পর্যটকরা যেন উন্নত সুবিধা পান সেজন্য কেটিএক্স ট্রেন স্টেশন থেকে হোটেলগুলোতে লাগেজ বিতরণ পরিষেবা ১৬টি স্থানে প্রসারিত করা হবে। নতুন পরিষেবা অঞ্চল হিসেবে দাজিওন, পূর্ব দায়েগু এবং গোয়াংজু সংজেয়ং স্টেশন যুক্ত হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বড় বড় শহরগুলোতে বিদেশি পর্যটকদের জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পাস, যা বিদেশি ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করে এমন একটি অ্যাপ চালু করা হবে। সরকার বলছে, বিদেশি দর্শনার্থীরা একদিন বা দুই দিনের পাস দিয়ে গণপরিবহন ব্যবহার করতে পারবেন।
কে-পপ বা কোরিয়ান পপ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী রাজত্ব করছে। সারা বিশ্বে গড়ে উঠেছে কে-পপের বিরাট ফ্যান ফলোয়ার। এই কৃতিত্বের সবচেয়ে বড় দাবিদার বিটিএস। এই ব্যান্ডটিই মূলত কে-পপকে বিশ্বের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছে।
ফলে কে-পপ এখন একটি বহু বিলিয়ন ডলারের শিল্প এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক বিনিয়োগ। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী কোরিয়ান কালচারের তরঙ্গ চলছে। শুধু কে-পপ নয়, কে-ড্রামাও সমানভাবে জনপ্রিয়। কে-কালচারের এই তরঙ্গ যেন কমছে না, বরং ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বের তরুণদের দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণে আগ্রহী করে তুলতে নতুন এই ভিসা চালু করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার।
Comments