চার বছরে শেয়ারবাজারে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, শেয়ারবাজার, ডিএসই-ইনভেস্টর,

শেয়ারবাজারে দীর্ঘস্থায়ী মন্দা প্রবণতার কারণে গত চার অর্থবছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।

সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডিএসইর অ্যাপ ডিএসই-ইনভেস্টরের মোবাইল ও ডেস্কটপ সংস্করণের নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৯০০ জনে। এই সংখ্যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৯ শতাংশ কম।

২০২২-২৩ অর্থবছরে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ৬২২ জন। কিন্তু বর্তমান ব্যবহারীর সংখ্যা ২০২২ অর্থবছরের সঙ্গে তুলনা করা হলে ৪০ শতাংশ কম। ২০২২ অর্থবছরে অ্যাপ ব্যবহারকারী ছিল ৭৭ হাজার ৯৪৯ জন।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, 'মধ্যবয়সীদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা অ্যাপটি ব্যবহার করে।'

তিনি আরও বলেন, 'বর্তমানে পুঁজিবাজারের অস্থিতিশীল অবস্থা তাদের বাজার ছাড়তে বাধ্য করছে।'

'এক সময় বাজারের পরিস্থিতি বেশ ভালো ছিল। কিন্তু তরুণরা বাজারে ঢুকতেই গত দুই তিন বছরে বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে, তাই তারা হতাশ হয়ে পড়ে,' যোগ করেন তিনি।

ডিএসই ২০২৩ সালে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের বার্ষিক দেড় হাজার টাকা সার্ভিস চার্জ আরোপ করে। কিন্তু চার্জ আরোপের কারণে বিনিয়োগকারীরা অ্যাপ এড়িয়ে চলছেন এমন অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন তিনি।

তার ভাষ্য, 'কেউ কেউ হয়তো বলবেন, সার্ভিস চার্জ আরোপের কারণে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে, কিন্তু আমি তা মনে করি না।'

'তারা যদি বাজার থেকে মুনাফা করতে পারে, তাহলে সার্ভিস চার্জ কোনো ব্যাপার না।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বেশিরভাগ মানুষ ব্রোকার বা প্রতিনিধিদের কাছে ফোন কলের মাধ্যমে লেনদেনের কাজ সম্পন্ন করেন। কিছু অংশ আছে যারা ব্রোকারেজ হাউসে এসেই লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করেন।

তিনি মন্তব্য করেন, এটি শুধু স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার না, এখানে বাড়তি কোনো খরচও নেই।

তিনি বলেন, আমি মানছি তরুণ প্রজন্ম ও পেশাদাররা অ্যাপসের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু এটাও দেখতে হবে, বাজারে যে হতাশাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সামনে বাজার ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

'তাই শুধু মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা নয়, বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, মানুষ বাজার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে,' বলেন তিনি।

এদিকে, টার্নওভার বা মোট লেনদেনেও একই প্রবণতা দেখা গেছে। ২০২৪ অর্থবছরে টার্নওভার আগের বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে ২১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

২০২৩ অর্থবছরে অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ২১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা, যা ২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ কম ছিল।

২০২২ অর্থবছরে টার্নওভার ছিল ৪২ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, যা ২০২১ অর্থবছরের ২৮ হাজার ৮০৪ কোটি টাকার তুলনায় ৪৭ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি ছিল।

ডিএসইর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সার্বিক লেনদেন কমে যাওয়ায় মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে শেয়ারের লেনদেন কমেছে। টার্নওভার বাড়লে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বাড়বে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডিএসইর দৈনিক গড় টার্নওভার আগের বছরের চেয়ে ২২ শতাংশ কমে ৬২১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে যা ছিল ৭৯২ কোটি টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Postgrad doctors block Shahbagh demanding stipend hike

The blockade resulted in halt of traffic movement, causing huge suffering to commuters

1h ago