২ বছরে এক চতুর্থাংশ বিও অ্যাকাউন্ট বন্ধ

শেয়াবাজার, বিও অ্যাকাউন্ট, সিডিবিএল, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড, ডিএসই, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ,
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ছবি: স্টার

দেশের  শেয়াবাজারে নানাবিধ দুর্বলতা থাকায় গত ২ বছরে প্রায় ৬ লাখ ৫৬ হাজার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য অনুসারে, গত ৬ জুলাই বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ১৮ লাখ ৫৫ হাজার। ২০২১ সালে একই সময়ে তা ছিল ২৫ লাখ ১২ হাজার।

শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কয়েক বছর আগেও স্বল্পমূল্যে শেয়ার পাওয়ার জন্য আইপিও লটারিতে অংশ নিতে বিনিয়োগকারীদের অনেককে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে দেখা গেছে।

২০২০ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই ব্যবস্থাটি এমনভাবে পরিবর্তন করে যার মাধ্যমে আইপিও সাবস্ক্রাইব করা প্রত্যেককে শেয়ার সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া যায়।

যেহেতু প্রতিটি আইপিও বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারী সাবস্ক্রাইব করেন, তাই সমান বিতরণ ব্যবস্থার ফলে প্রত্যেকে মাত্র অল্প কয়েকটি করে শেয়ার পান।

এ ছাড়াও, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা পূর্বশর্ত দিয়ে বলেছে যে, আইপিও সাবস্ক্রাইব করতে ইচ্ছুক যে কাউকে সেকেন্ডারি মার্কেটে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।

সেই কর্মকর্তা আরও বলেন, এসবের অর্থ হলো বিও অ্যাকাউন্ট পরিচালনা এখন আর লাভজনক নয়। তাই আইপিওর আশায় থাকা বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার থেকে সরে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, 'আমি মনে করি, বিএসইসি লটারির পরিবর্তে প্রো-রাটা শেয়ার বরাদ্দ চালু করা একটি ভালো উদ্যোগ। কারণ এটি দীর্ঘ সময় বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দেবে।'

একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েক মাসে নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সংখ্যা ব্যাপকহারে কমে গেছে।'

'কারণ, সেকেন্ডারি মার্কেট এখন আর লাভজনক নয়। বিশেষ করে, ফ্লোর প্রাইস বাজারকে অস্থিতিশীল করেছে। তাই বিনিয়োগকারীরা নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী নন,' যোগ করেন তিনি।

ফ্লোর প্রাইস হলো সর্বনিম্ন মূল্য যার নিচে শেয়ার লেনদেন করা যাবে না। গত ২৮ জুলাই ও তার আগের ৪ দিনের সমাপনী মূল্যের গড় দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে শেয়ারবাজারের সূচকের ক্রমাগত পতন ঠেকাতে গত বছরের জুলাইয়ে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে বিএসইসি।

ফ্লোর প্রাইসের কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স গত ২ বছরে মাত্র ১৩৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়েছে।

ফ্লোর প্রাইসের কারণে ক্রেতা না থাকায় বিনিয়োগকারীরা সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে অর্থ উপার্জনে হিমশিম খাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেন, 'তাহলে নতুনরা কীভাবে বাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ পাবেন?'

তিনি আরও বলেন, 'পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা গত ২ বছরে কোনো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের আইপিও পাননি, যা তাদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে পারত।'

তার মতে, গত ২ বছরে কয়েকটি ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে এসেছিল। কিন্তু তা মূলত নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্ত পূরণের জন্য।

এ কারণে অল্প সংখ্যক বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে এবং অনেকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Polytechnic students protest Bangladesh 2025

Polytechnic students issue 48-hr ultimatum over six-point demand

Threaten a long march to Dhaka if govt doesn't respond to demands

2h ago