ঢাকা-কলকাতা এড়িয়ে মালদ্বীপ হয়ে পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বা ভারতের বিমান পরিবহন ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে মালদ্বীপকে সহজ ও সস্তা পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পোশাক রপ্তানিকারকরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান—ঢাকা থেকে প্রায় দুই হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ দিয়ে আকাশপথে পণ্য পরিবহনের ফলে ইউরোপের দেশগুলোয় প্রতি কেজি পণ্য পাঠাতে প্রায় এক ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় হচ্ছে।
তারা বলছেন—প্রচলিত পথ ঢাকা, কলকাতা, কলম্বো বা সিঙ্গাপুর দিয়ে পণ্য পাঠানো একদিকে যেমন ব্যয়বহুল অন্যদিকে সময় সাপেক্ষ।
গত জুলাই ও আগস্টের ছাত্র বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি পোশাক শিল্প সংকটে পড়ায় রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ঢাকা থেকে প্রতি কেজি পণ্য পাঠাতে খরচ ছয় ডলার ৩০ সেন্ট থেকে সাড়ে ছয় ডলারে উঠেছিল। এখন ইউরোপে পণ্য পাঠাতে প্রতি কেজিতে খরচ হচ্ছে তিন ডলার ৮০ সেন্ট থেকে চার ডলার ১০ সেন্ট।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সভাপতি কবির আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অন্যান্য রুটে পণ্য পাঠানোর খরচ বেশি হওয়ায় মালদ্বীপের রুটটি সামনে চলে আসে।'
দেশে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা ফিরে আসে। কারখানাগুলো আবার চালু হলে পণ্য জাহাজীকরণের চাহিদা বেড়ে যায়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রাই কার্গো শিপমেন্টের চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে ৮০০-৯০০ টনে দাঁড়ায়। আগে ছিল ৪০০-৪৫০ টন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় বন্দরসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রপ্তানিকারকরা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পাঠাতে পারেননি।
পণ্য রপ্তানিতে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পূরণে মরিয়া হয়ে ওঠায় জাহাজীকরণ সংকট দ্রুত দূর করতে ব্যবস্থা নিতে হয়।
পরিচালন খরচ, শুল্ক ও ঝুঁকির কারণে ঢাকার বিমানবন্দর রপ্তানিকারকদের জন্য ব্যয়বহুল। সেখানে স্ক্যানিং মেশিন ও বিস্ফোরক শনাক্তকরণ ব্যবস্থার (ইডিএস) মতো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব। এ ছাড়াও, পণ্য পরিবহনে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগকারী পর্যাপ্ত সংখ্যক এয়ারলাইন্স নেই।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, মালদ্বীপে দিয়ে দ্রুত পণ্য পাঠানো যায়। প্রতি কেজিতে খরচ হয় মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ডলার।
Comments