আরও ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা

আইএমএফ
ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

অতিরিক্ত তিন বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করছে বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ব্লুমবার্গ এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ব্লুমবার্গকে বলেন, 'বাংলাদেশ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। এটি কাটিয়ে উঠতে ঋণের প্রয়োজন। বকেয়া ঋণ মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক থেকেও ডলার কেনা হচ্ছে।'

গত বছর আইএমএফের কাছ থেকে চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ পায় বাংলাদেশ। গভর্নর জানান, অতিরিক্ত তিন বিলিয়ন ডলার পেতে সংস্থাটির সঙ্গে কথা চলছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত দেড় বিলিয়ন ডলার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) কাছে আরও এক বিলিয়ন ডলার করে চাওয়া হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বাধ্য করা প্রাণঘাতী গণ-আন্দোলনের পর দেশটি কয়েক সপ্তাহের বিপর্যয় থেকে কেবল উঠে আসছে।

সরকারবিরোধী বিক্ষোভ-সহিংসতার কারণে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাকের চালান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান সংকটের আগেই দেশের রিজার্ভ চাপে ছিল। গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত তা ছিল সাড়ে ২০ বিলিয়ন ডলার। এ দিয়ে প্রায় তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব।

আইএমএফের সঙ্গে তিন দশক কাজ করা প্রথিতযশা এই অর্থনীতিবিদকে সম্প্রতি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সরকার পতনের পর তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ও দুই ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগ করেন।

গত ১৩ আগস্ট আহসান এইচ মনসুর গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তিন দিনে আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে ২০ কোটি ডলারের বেশি কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য স্থানীয় ব্যাংকগুলো থেকে প্রতি মাসে ১০০ কোটি ডলার কেনা।

বিবিসিকে বর্তমান গভর্নর জোর দিয়ে বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতকে দুর্নীতিমুক্ত করাই তার মূল লক্ষ্য।

তার ভাষ্য, 'আর্থিক ব্যবস্থায় পরিকল্পিতভাবে "ডাকাতি" হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। শেয়ার বাজার ও সার্বিক অর্থনীতিতে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।'

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ খেলাপি হওয়ার পর দেশের ব্যাংকগুলোয় আমানত ও উৎপাদনশীল নয় এমন সম্পদের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

বিবিসিকে গভর্নর আরও বলেন, 'তারা টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুর, দুবাই, লন্ডন ও অন্যান্য জায়গায় রেখেছেন। প্রথম প্রচেষ্টা হবে অপরাধীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এবং টাকা ফেরত আনা।'

Comments