গত অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন খরচ কমেছে ৪.২৫ শতাংশ
সরকার গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৮১ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। এটি করোনা মহামারির সময়ের প্রায় সমান।
এডিপি বাস্তবায়নের হার এর আগের অর্থবছরের তুলনায় চার দশমিক ২৫ শতাংশ পয়েন্ট কম।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকার মোট সংশোধিত এডিপির মধ্যে দুই লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।
এডিপি বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আলাদা করে রাখা এক লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার মধ্যে তারা খরচ করেছে এক লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা বা ৭৭ শতাংশ। এটি শতাংশের হিসাবে ১৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
একই সময়ে বিদেশি ঋণ থেকে খরচ হয়েছে ৮৬ শতাংশ। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় চার শতাংশ পয়েন্ট কমেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৫ শতাংশ। প্রায় দুই লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে খরচ হয়েছে দুই লাখ এক হাজার কোটি টাকা।
এডিপি বাস্তবায়ন কম হওয়া প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিষ্ঠানগুলো লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বরাদ্দ টাকা খরচ করতে না পারায় সরকার প্রতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিটি অর্থবছরের মূল এডিপি সংশোধন করে।'
তিনি আরও বলেন, 'ক্রয় প্রক্রিয়া, টেন্ডার, জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ সাধারণত নানান কারণে দেরি হওয়ায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কাজ দেরিতে শুরু হয়।'
দক্ষ জনবল ছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নে জবাবদিহিতা ও সঠিক মূল্যায়নের অভাব আছে।
এডিপি বাস্তবায়ন কম হওয়ার মূল কারণ উল্লেখ করে ফাহমিদা আরও বলেন, 'এডিপি যথাসময়ে বাস্তবায়িত হলে স্বাভাবিকভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়।'
বরাদ্দ পাওয়া শীর্ষ ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ বরাদ্দের ১০১ শতাংশ খরচ করে সর্বোচ্চ বাস্তবায়নের হার অর্জন করেছে।
এরপরই আছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এর বাস্তবায়ন হার ৯৬ শতাংশ।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাদ্দের ৯৪ শতাংশ খরচ করে তৃতীয় শীর্ষ বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ও ৯৩ দশমিক ৯১ শতাংশ নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় চতুর্থ অবস্থানে আছে।
এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৮৮ শতাংশ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৭১ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৮৫ শতাংশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ৯৩ শতাংশ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ৭৭ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৮৯ শতাংশ, সেতু বিভাগ ৮০ শতাংশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৭৪ শতাংশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৭৫ শতাংশ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯০ শতাংশ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ৬৩ শতাংশ।
Comments