পোশাক রপ্তানিকারকরা ব্যবসায় নতুন গতি আশা করছেন

পোশাক রপ্তানি
দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় কারখানা আবার চালুর আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: ফাইল ফটো

পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসায় ব্যবসায় নতুন গতি আসবে বলে আশা করছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা।

সাম্প্রতিক সহিংসতা ও বারবার কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসার পরিবেশ স্থবির হয়ে পড়ে। তারা রপ্তানির জন্য পণ্য তৈরি করতে পারছিলেন না।

রপ্তানিকারকরা আরও জানান—গত জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে বড়দিন উপলক্ষে পোশাক রপ্তানি এবং আগামী বসন্ত ও গ্রীষ্মে নতুন পণ্যের কার্যাদেশ পাওয়ার মৌসুম হলেও সহিংসতার মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পণ্য পাঠানোয় সমস্যায় পড়েছেন তারা।

দেশজুড়ে সাম্প্রতিক ইন্টারনেট বন্ধ ও বহু মানুষের প্রাণহানির কারণে রপ্তানিকারকরা দেশে-বিদেশে তাদের ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

রাজনৈতিক সংকটের কারণে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন ও পণ্য পরিবহনে অসুবিধার কারণে পোশাক প্রস্তুতকারকরা এখন তাদের কারখানা আবার নতুন উদ্যমে চালুর পরিকল্পনা করছেন।

প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করায় পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বৈঠক ডাকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পোশাক কারখানা ও বস্ত্রকল আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তারা। আজ মঙ্গলবার কারখানা খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মালিকরা।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সহিংসতা ও কারফিউর মধ্যে তারা চার দিন কারখানা বন্ধ রাখেন। প্রথম দফা বন্ধের সময় ও দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধের কারণে তারা বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেননি।

ছাত্র আন্দোলন ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে বিজিএমইএ ইতোমধ্যে ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বলেছে। কারখানার মালিকরা ক্ষতি পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের বেশি বলে জানিয়েছেন।

শ্রমিক অসন্তোষ ও ভাঙচুরের আশঙ্কায় দেশে পোশাক ও বস্ত্র শিল্প কারখানা বন্ধ রেখেছেন মালিকরা।

প্রথম দফা সহিংসতা ও কারফিউ চলার সময়ে বিদেশি ক্রেতারা পণ্যের কার্যাদেশ দিতে ও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজীকরণে জটিলতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দিপু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কারখানা খোলার বিষয়ে আলোচনা করেছি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কথা বিবেচনা করে কারখানা চালু করতে সময় লাগতে পারে।'

'আমরা খুব শিগগিরই কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে চাই। তবে কারখানা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার। তাদের নির্দেশনা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।'

বন্ড লাইসেন্স নবায়নের সময় হওয়ায় ব্যবসা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করা কঠিন হয়ে পড়লেও অনেকে, বিশেষ করে চট্টগ্রামের রপ্তানিকারকরা অভিযোগ করছেন, শুল্ক বিভাগ বন্ড লাইসেন্স নবায়ন করছে না।

সাম্প্রতিক সহিংসতা-কারফিউয়ের কারণে অনেকে পণ্যের দামে ছাড় দিতে ও বিদেশি ক্রেতাদের কার্যাদেশ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।

ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ উচ্চহারে নিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এগুলো ব্যবসাকে প্রভাবিত করছে। সমস্যা সমাধানে শিগগির ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও প্রশাসনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা দরকার।'

'আমাদের এখন গুরুত্বে সঙ্গে কাজ করতে হবে,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পোশাক রপ্তানিকারক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশা করছি, এখন সবকিছু বদলে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য শিগগির স্বাভাবিক হবে।'

স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করায় বিদেশি ক্রেতাদের কার্যাদেশও শিগগিরই ফিরে পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএর এক পরিচালক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যত দ্রুত সম্ভব কারখানা আবার চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

2h ago