রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার পেল ২০ শিল্পপ্রতিষ্ঠান

শিল্প মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন,

শিল্প মন্ত্রণালয় দেশের ছয় ক্যাটাগরির ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে 'রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০২১' প্রদান করেছে।

মূলত জাতীয় অর্থনীতির শিল্পখাতে অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি, সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই পুরষ্কার দেওয়া হলো।

আজ বৃহস্পতিবার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, 'বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা ও নীতি এবং কার্যকর পদক্ষেপ ফলে শিল্পখাতে উল্লেখযোগ্য ও দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।'

'এ ধরনের সৃজনশীল উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয় নিয়মিত 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার', 'রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার', 'সিআইপি (শিল্প) কার্ড', 'প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড' পুরস্কার প্রদান করে আসছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশ নিজেই একটি বড় বাজার। অভ্যন্তরীণ বাজারসহ বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধিতে আমাদের গুণগতমানের পণ্য উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, 'কৃষি উৎপাদনে ঈর্ষণীয় সাফল্য থাকা সত্ত্বেও আমরা কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও রপ্তানিতে অনেকটা পিছিয়ে আছি। প্রক্রিয়াজাতকরণের কম সুযোগ ও সংরক্ষণাগারের অভাবে আমাদের উৎপাদিত শাকসবজি ও ফলমূলের প্রায় ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।'

'বছরে আমাদের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয় মাত্র এক বিলিয়ন ডলারের মতো। অথচ এখানে সম্ভাবনা অনেক বেশি, কৃষিপণ্য রপ্তানি করে প্রতি বছর কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব,' বলেন তিনি।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, 'টেকসই ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে শিল্প মন্ত্রণালয় উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি একটি বিশ্বমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডাটাবেজ এবং শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'

শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ছয় ক্যাটাগরির মোট ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান/উদ্যোক্তাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ছয়টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে চারটি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি এবং হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি।

যেসব প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পেল

বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে প্রথম হয়েছে ইকোটেক্স লিমিটেড, প্রাণ ডেইরি লিমিটেড ও মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড; দ্বিতীয় হয়েছে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড; যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে স্নোটেক্স আউটারওয়্যার লিমিটেড ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে বেঙ্গল পলি এন্ড পেপার স্যাক লিমিটেড; দ্বিতীয় হয়েছে বসুমতি ডিষ্ট্রিবিউশন লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে এপিএস এ্যাপারেলস লিমিটেড। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে প্রথম হয়েছে দ্য রিলায়েবল বিল্ডার্স ও কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে গুনজে ইউনাইটেড লিমিটেড। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ফারিহা গ্রিন মুড লেদারস্ লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে এ.বি.এম ওয়াটার কোম্পানি এবং তৃতীয় হয়েছে ডিপলেড ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ব্লু-স্টার এগ্রো প্রোডাক্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, দ্বিতীয় হয়েছে প্রীতি বিউটি পার্লার এবং তৃতীয় হয়েছে লেহাজ সালমা যুব মহিলা কল্যাণ সংস্থা। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে বিজ সলুশনস লিমিটেড।

শিল্প মন্ত্রণালয় 'রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান সংক্রান্ত নির্দেশনাবলী ২০১৩' অনুযায়ী ২০১৪ সালে প্রথম বারের মতো 'রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার' দেওয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর সপ্তম বারের মতো 'রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০২১' প্রদান করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Apparel Buyers Delay Price Increases Post-Wage Hike Promise

Garment exports to US grow 17%

Bangladesh shipped apparels worth $5.74 billion in the July-March period to the USA

9h ago