আগামী অর্থবছরে ৫.৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এইচএসবিসির

এইচএসবিসি আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে
এইচএসবিসি, জিডিপি অনুপাত, অর্থনীতি,
ছবি: সংগৃহীত

এইচএসবিসির চিফ এশিয়া ইকোনমিস্ট ও কো-হেড অফ গ্লাবাল রিসার্চ এশিয়া ফ্রেডরিক নিউম্যান বলেছেন, এইচএসবিসি আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করছে, যা পরবর্তী বছরে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

গত ১২ মে দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) লিমিটেড বাংলাদেশে 'এইচএসবিসি ইকোনমিক আউটলুক: আ পারসপেকটিভ অন বাংলাদেশ' শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে মূল বক্তব্যে এই পূর্বাভাসের কথা জানান ফ্রেডরিক নিউম্যান।

ফ্রেডরিক নিউম্যান তার মূলবক্তব্যে বর্তমানে এশিয়ায় বিদ্যমান প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের প্রায় রেকর্ড সমতুল্য উচ্চ প্রবাহ তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশকে এই সুযোগ কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর তাগিদ দেন।

তিনি পূর্বাভাস দেন, 'আগামী চার বছরে বাংলাদেশের গড় ইনক্রিমেন্টাল জিডিপি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি হবে, যা অন্যান্য অনেক এশিয়ান দেশ থেকে বেশি। জিডিপির এই প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতির চাপ কমা, ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গৃহস্থালির ব্যয়ের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।'

তিনি জানান, বৈশ্বিক ভাবমূর্তির উন্নতি হওয়ার ফলে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়বে।

ফ্রেডরিক তার বক্তব্যে 'বিশ্বের অর্থনৈতিক নীতিমালার অনিশ্চয়তা সূচক' উপস্থাপন করেন। যেখানে একটি লেখচিত্রের মাধ্যমে গত বছরগুলোর বৈশ্বিক অনিশ্চয়তাকে সংজ্ঞায়িত করান হয়েছে।

ওই সূচকটি করোনা মহামারির সময় শীর্ষস্থানে পৌঁছায়, যার দ্বারা অর্থনীতির বহুমুখী চ্যালেঞ্জ নির্দেশিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। তাই প্রবৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও আর্থিক এবং কাঠামোগত সংস্কারের গতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উজ্জ্বল থাকছে।

এই ফোরামে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ফ্রেডরিক নিউম্যান, মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ভাইস-চ্যান্সেলর ড. রুবানা হক, ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ফরেইন ইনভেস্টরস চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি জাভেদ আখতার।

প্যানেল আলোচনায় সালমান এফ রহমান বলেন, 'আমাদের দেশ আভ্যন্তরীণভাবে ভালো করা সত্ত্বেও, বাহ্যিক কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সমস্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস ও টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি। রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি কর আদায় আধুনিক করা এবং রপ্তানি বহুমুখী করার ওপর আমাদের আরও জোর দিতে হবে।'

ফ্রেডরিক নিউম্যান বলেন, 'পোশাকখাতের ক্রমবর্ধমান উন্নতির পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশকে আগামী দিনে আরও ভালো অবস্থানে পৌঁছাবে। এক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির চাপ কমিয়ে আনতে সক্ষম হলে তা  গৃহস্থালির ব্যয়ে সহায়তা প্রদান করবে, যা অর্থনীতিকে আরও বেগবান করবে।'

এ সময় মো. মাহবুব উর রহমান বলেন, 'বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশেও আমরা দক্ষ কর্মীবাহিনী, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান রেমিটেন্স প্রবাহের মাধ্যমে অর্থনীতির অগ্রগতির গতিপথ অটুট রেখেছি। বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক লক্ষণ দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, দেশের প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করতে এইচএসবিসি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'

এ বিষয়ে এইচএসবিসি বাংলাদেশের হোলসেল ব্যাংকিংয়ের কান্ট্রি হেড জেরার্ড হাউহে বলেন, 'সবসময় পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক অর্থনীতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, গতিশীল বাজারের সঙ্গে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে।'

Comments