মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পলিসি রেট বাড়িয়ে ৫.৭৫ শতাংশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল সুদ হার (পলিসি রেট) ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ২৯ মে থেকে তৃতীয়বারের মতো এই সুদ হার বাড়ানো হলো। এর আগে এত অল্প সময়ের মধ্যে একাধিকবার সুদের হার বাড়ানোর নজির নেই।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ায় মূল্যস্ফীতির বাড়তি চাপ নিয়ন্ত্রণে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো পলিসি রেট বাড়াচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফেডারেল রিজার্ভ সেপ্টেম্বরে টানা পঞ্চমবারের মতো সুদের হার বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও জুলাই ও সেপ্টেম্বরে সুদ হার বাড়িয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যও সুদ হার বাড়িয়েছে। একইভাবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও টানা তৃতীয়বারের মতো পলিসি রেট বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেটের সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবে কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ এই মুহূর্তে ঋণের সুদের হারের সর্বোচ্চ সীমার কারণে ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ঋণের সুদের হারের সীমা ৯ শতাংশ বজায় রেখেছে।
সাধারণত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতি রোধে এবং মূল্য স্থিতিশীলতা রক্ষায় সুদের হার বাড়িয়ে থাকে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) মতে, উচ্চ সুদ হার বজায় থাকলে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ঋণের চাহিদা কমে যায়। এতে ব্যয় ও বিনিয়োগ দুটোই কমে। এটি অর্থনীতিতে সামগ্রিক চাহিদা কমিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ কমায়।
বাংলাদেশে পলিসি রেট রেপো সুদহার হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের সুদ হারকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানত উভয়ের সুদের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেঞ্চমার্ক হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
রেপো রেটের সুদ হার অনুযায়ী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেয়। এরপর তা ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে বিতরণ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মো. হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে জানান, আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে, বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বাড়িয়েছে।
Comments