চট্টগ্রাম বন্দরে চলতি বছর কন্টেইনার পরিবহন কমতে পারে
চট্টগ্রাম বন্দরে গত বছরের তুলনায় এ বছর কন্টেইনার পরিবহন কমছে। এ বছর কন্টেইনার পরিবহনের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় কম হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই খাতের সংশ্লিষ্টরা। মূলত, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যবহারকারীরা কন্টেইনার পরিবহন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও সার্বিকভাবে বৈদেশিক বাণিজ্য কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে টানা ২ মাস কন্টেইনার পরিবহন কমলেও নভেম্বরে এসে আবার তা বাড়তে শুরু করে। তবে বছরের শেষ নাগাদ মোট পরিবহনের পরিমাণ ২০২১ সালের তুলনায় কম হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৪৪৮ টিইইউ কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭ টিইইউ। অর্থাৎ ১ বছরে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।
এ বছর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই বন্দরে মোট ২৯ লাখ ৩ হাজার ১১৬ টিইইউ পরিবহন সম্পন্ন হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের মূল জেটি, কেরানীগঞ্জের পানগাঁও বন্দর, ঢাকার কমলাপুরের ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) ও চট্টগ্রামের ১৯টি বেসরকারি আইসিডি থেকে আমদানি, রপ্তানি ও খালি বাক্স লোড ও আনলোডের তথ্য সমন্বয় করে কন্টেইনার পরিবহনের এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বছরের প্রতি মাসে গড়ে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯১৯ টিইইউ কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে। একই ধারা ডিসেম্বরে অব্যাহত থাকলে গত বছরের চেয়ে পরিবহনের পরিমাণ ৪৭ হাজার টিইইউ কম হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে পরিবহনের সংখ্যা যথাক্রমে ৮ দশমিক ৬ এবং ৩ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। তবে এটি নভেম্বরে ৩ শতাংশ বেড়ে যায়।
রপ্তানি আদেশের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলো উৎপাদন কমিয়েছে। ফলে কাঁচামাল আমদানির পরিমাণও কমেছে।
জুলাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য সব ব্যাংককে নির্দেশ দেয়, বিলাসবহুল ও নিত্যপণ্য নয় এমন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খুলতে আমদানিকারকের কাছ থেকে ঊর্ধ্বে ১০০ শতাংশ অগ্রিম পেমেন্ট সংগ্রহ করতে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে জানা গেছে, জুলাই থেকে নভেম্বরের মাঝে রপ্তানির পরিমাণ এর আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে ২১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে অক্টোবরের মাঝে আমদানির পরিমাণ ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়ে ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন হয়েছে।
দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান আমদানিকারী রাষ্ট্রগুলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে। ফলে এই দেশগুলো থেকে কার্যাদেশ আসা কমে গেছে।
এসব কারণেই জুলাই থেকে অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এর আগে ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটে। যার ফলে পরিবহনে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছিল। গত বছর ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়।
সংক্ষেপিত: পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে Ctg port's container traffic may drop in 2022
অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান
Comments