দাবি মেনে নেওয়ায় কাজে ফিরেছেন গাজীপুর-আশুলিয়ার পোশাকশ্রমিকরা
শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মালিকপক্ষ মেনে নেওয়ায় কাজে ফিরেছেন গাজীপুর ও আশুলিয়ার বেশিরভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
আজ বুধবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় ফেরার পর বিকেল পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি।
তবে, গাজীপুরে ১৩টি ও আশুলিয়ার ১৯টি কারখানা বন্ধ আছে আজও।
হাজিরা বোনাস ও টিফিন বিল বাড়ানো, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ ১৮ দাবিতে গত ৩১ আগস্ট থেকে আন্দোলন করছিলেন পোশাকশ্রমিকরা। অবশেষে গতকাল শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা এবং টিফিন ও রাত্রিকালীন ভাতা ১০ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হন কারখানা মালিকরা।
গাজীপুর
গাজীপুরের স্টার ক্র্যাফট লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিক এনামুল হকসহ একাধিক কারখানা শ্রমিকরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানায় হাজিরা বোনাস দেওয়া হবে, ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে শুনে খুশি হয়েছি। আমরা কাজে ফিরেছি।'
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন গাজীপুর মহানগরের সভাপতি শফিউল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'চলমান শ্রম পরিস্থিতি বিবেচনায় গতকাল মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা। তারা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো আইডেন্টিফাই করতে পেরেছেন। দাবি মেনে নেওয়ায় আজ গাজীপুরের শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফিরেছে।'
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র গাজীপুরের জেলা সভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এতে শ্রমিক ভাইরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে পোশাক শিল্পে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়। ছোট ছোট সমস্যাগুলোকেও এড্রেস করতে হবে। তাহলেই শ্রম খাতে অসন্তোষ কম হবে।'
জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গাজীপুরে বেশিরভাগ পোশাক কারখানায় স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন।
তিনি বলেন, 'আমরা শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে, বিভিন্ন ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলছি। দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়টি শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনকে জানিয়ে দিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'গাজীপুরে যে ১৩টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল সেগুলো কয়েকদিনের মধ্যেই চালু হবে বলে আশা করছি।'
আশুলিয়া
শিল্প পুলিশ বলছে, কারখানায় শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় যৌথবাহিনীর টহল অব্যাহত আছে।
তারা জানান, বিভিন্ন কারণে আশুলিয়ার মোট ১৪টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় এখনো বন্ধ। এছাড়া ৫টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। দ্রুত মালিকপক্ষকে ১৮ দফা বাস্তবায়ন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।'
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্ধ কারখানার শ্রমিকরাও কাজে ফিরতে চায় বলে আমরা জেনেছি।'
Comments