কারখানা ভাঙচুরের অভিযোগে আশুলিয়ায় ২০ শ্রমিকের নামে মামলা

আশুলিয়া থানা। ছবি: সংগৃহীত

কারখানা ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগে ২০ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ।

আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার মডিনাপেল ফ্যাশন ক্রাফট লি. কারখানাটি গতকাল বুধবার থেকে বন্ধ আছে। কারখানার ফটকে অভিযুক্ত শ্রমিকদের নামের তালিকা টাঙানো হয়েছে।

অভিযুক্তদের সম্পর্কে নোটিশে বলা হয়েছে, এই শ্রমিকরা ৯ সেপ্টেম্বর কারখানায় বে আইনি আন্দোলন করে কাজ বন্ধ রেখে বেড়িয়ে যায়। পরদিন কারখানায় প্রবেশ করে কাজ বন্ধ রাখে। বেআইনি দাবি তুলে কারখানার ভেতরে নাশকতা সৃষ্টি করে। কারখানার সম্পত্তি নষ্ট করে ভিতীকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা কারখানার ডেপুটি ম্যানেজার এস কে খোকনসহ কয়েকজন কর্মীকে মারধর করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ ২০ শ্রমিকের নামে মামলা করেছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নির্মল কুমার দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এখন পর্যন্ত কারখানায় হামলা ভাঙচুর ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধরে অভিযোগে মোট তিনটি মামলা হয়েছে। দুইটি মামলায় অজ্ঞাত বহিরাগতদের আসামি করা হয়েছে আর একটি মামলায় ২০ জন শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

মামলার আসামিদের একজন নাহিদ। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কারখানায় আমরা কোনো ভাঙচুর বা কোনো কর্মকর্তাকে মারধর করিনি। আমাদের কারখানা এলাকায় আন্দোলন চলছিল। এরপরও আমরা কাজ করেছি।

তিনি আরও বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি ছিল ডেপুটি ম্যানেজার এস কে খোকনকে অপসারন করতে হবে। তার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন ও নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এই দাবি জানানোর পর দিনই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে এবং আমাদের নামে মামলা দেয়।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কারখানার ডেপুটি ম্যানেজার এস কে খোকন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শ্রমিকরা আমাকে ও আমার সহকর্মীদের মেরে গুরুতর আহত করে। এই ঘটনায় কারখানার পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শ্রমিকদের নামে মামলা করা অশুভ লক্ষণ। এই সংকটের সময়ে শ্রমিকদের নামে মামলা করা মানেই হচ্ছে শ্রমিকদের উস্কে দেওয়া। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে শ্রমিকদের নামে মামলা করা বন্ধ করতে হবে।

শ্রম আইনের ১৩ / ১ ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষনা করা শ্রমিকদের শোষণ ও নিপিড়নের সামিল উল্লেখ করে এই শ্রমিক নেতা বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে না নিয়ে মালিক পক্ষ ঢালাওভাবে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করছে। এই ধারায় কারখানা বন্ধ করলে শ্রমিকরা বেতন পাবে না। শ্রমিকরা না খেয়ে মারা যাবে। এটা শ্রমিক নির্যাতন।

Comments